মানচিত্র বদলাচ্ছে ভারত-বাংলাদেশের
স্থলসীমান্ত চুক্তির পর মানচিত্র নকশা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ-ভারত। এর ফলে দুই দেশেরই মানচিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দুই দেশের ‘জয়েন বাউন্ডারি ওয়ার্কিং গ্রুপের’ আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারতের ২০ জন করে মোট ৪০ জন প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এটি এই গ্রুপের ষষ্ঠ বৈঠক। ২০০০ সালে প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মনিম ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন। এছাড়া অংশ নেন ছিটমহল এলাকার জেলা প্রশাসকরা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, নতুন মানচিত্রতে নতুন সীমানা চিহ্নিত হয়েছে। সেই সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়-জমি হস্তান্তর, নাগরিকত্ব, পুর্নবাসন আগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে দুই দেশের মানচিত্রে রদবদল আসছে; তা নিয়ে হয়েছে বিস্তর আলোচনা।
১৯৪৭ সালে স্যার সিরিল র্যাডক্লিফ ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা নির্ধারণের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলেও তা সঠিকভাবে করার পর্যাপ্ত সময় তিনি পাননি। কথিত আছে সীমানা নির্ধারণের কোনো প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ না করে খাবার টেবিলে মানচিত্রের ওপর পেন্সিল দিয়ে দাগ কেটে তিনি নির্ধারণ করেছিলেন ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা।
আন্তর্জাতিকভাবে যখন কোনো দেশের সীমানা নির্ধারণ করা হয় তখন এমনভাবে তা করা হয় যেন, সেখানে কোনো মানবিক বিপর্যয় না ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল ১৯৪৭’র দেশবিভাগে নির্ধারিত সীমানা। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের পর তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ভেতর এমন কিছু ভূ-খণ্ড চলে আসে যার মালিকানা থেকে যায় কুচবিহারের রাজার। অর্থাৎ ভারতের রাজার ভূমি পড়ে যায় পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর।
একইভাবে বর্তমান বাংলাদেশের কিছু অংশ ঢুকে যায় ভারতের ভেতর। কালক্রমে এসব ভূ-খণ্ডের নামকরণ হয় ‘ছিটমহল’। আর ছিটমহলের বাসিন্দাদের পরিচয় হয় ‘মানুষ’ নয় বরং ‘ছিটের মানুষ’ বলে। আর সম্প্রতি ভারতের সংসদে পাস হয় বহুল আলোচিত ‘বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত বিল’। যার মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে দুই দেশের মানচিত্র।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চার রাজ্য আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানা রেখা পরিবর্তন হয়েছে। এদিকে, নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটের সীমানাও বদলে যাচ্ছে ব্যাপকভাবে। এসব স্থানে নতুন করে পিলার বসানো হবে। এছাড়া নতুন করে রূপ পাবে দুই দেশের মানচিত্রের চিত্রও।