সৎ বোন-দাদির সাথে ওবামার নৈশভোজ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার প্রথম কেনিয়া সফরে তার বর্ধিত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন।প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবার দুই দিনের সফরে শুক্রবার তিনি কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি পৌঁছান।
ওবামাকে বহনকারী এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানটি নাইরোবি পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে যারা স্বাগত জানান তাদের অন্যতম হলেন ওবামার সৎ বোন উমা ওবামা।
এ সময় তারা উভয়ে উষ্ণ আলিঙ্গন করেন। এরপর প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার হোটেলে পৌঁছান। সেখানে তার বর্ধিত পরিবারের আরো অনেক সদস্য অপেক্ষায় ছিলেন। ওবামা তাদের সাথে নৈশভোজ সারেন। এ সময় ওবামার সৎ-দাদি মামা সারাহ, যাকে ওবামা গ্র্যানি ডাকেন, সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ওবামার বাবা কেনিয়ার নাগরিক ও পাইপ-ধূমপায়ী অর্থনীতিবিদ নাইরোবিতে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে গাড়ি চাপায় মারা যান। ওবামার বয়স যখন দুই বছর তখন তিনি আমেরিকা থেকে কেনিয়া চলে যান।
ওবামার বাবা কেনিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াটার বাবা এবং কেনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা জোমো কেনিয়াটার সরকারে চাকুরি করতেন।
আনন্দে ভাসছে কেনিয়া
এদিকে ওবামার সফর নিয়ে দেশটিতে সঞ্চার হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, এমনকি উন্মাদনার। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর ঘিরে কেনিয়া ভাসছে আনন্দের জোয়ারে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত আল-শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্ভাব্য হামলা এড়াতে রাজধানী নাইরোবিতে নেওয়া হয়েছে ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ নিরাপত্তাব্যবস্থা।
ওবামার সৎদাদি সারাহ হোসেন ওবামা গতকাল সকালেই দেশটির কিসুমু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানে করে নাইরোবি পৌঁছান। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওবামার সঙ্গে দেখা করে তার বাবা বারাক হোসেন ওবামা সিনিয়রের সমাধিতে আসার জন্য রাজি করাব।’
‘আমি চাই, সে সিয়ায়া কাউন্টির কোগেলো গ্রামে তার বাবার সমাধিতে গিয়ে প্রার্থনা করুক। জানি না তাকে রাজি করাতে পারব কি না। তবে চেষ্টার ত্রুটি রাখব না। এলাকাবাসীও তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’
অবশ্য মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে এবারের সফরে তার বাবার সমাধিতে যেতে পারছেন না ওবামা।
এরপরও উৎসবের কমতি নেই। দোকানে দোকানে বিক্রি হচ্ছে বিশেষ ধরনের টি-শার্ট ও টুপি। লোকজন সেগুলো পরে নেচে-গেয়ে আনন্দ করছেন। কোনো কোনোটিতে লেখা, ‘সিয়ায়া—এই সেই স্থান, যেখান থেকে আমার গল্প শুরু হয়েছে’। আবার কোনোটিতে লেখা, ‘বাবা, আমি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরছি’।
কিসুমু-বুসিয়া মহাসড়কের পাশে বিশাল এক বিলবোর্ডে বড় বড় হরফে লেখা, ‘পিতৃগৃহে ওবামাকে স্বাগত’।