ছাত্রলীগের নয়া কেন্দ্রীয় কমিটি : সভাপতি সোহাগ সম্পাদক জাকির
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মো. জাকির হোসেন। গতকাল রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ভোটগণনা শেষে সন্ধ্যার পর এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সভাপতি পদে সাইফুর রহমান সোহাগ পেয়েছেন ২৬৯০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মো. জাকির হোসেন পেয়েছেন ২৬৭৫ ভোট। ৩ হাজার ১৩৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২ হাজার ৮১৯ জন। সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ছাত্রলীগের ২৮তম কাউন্সিলের দ্বিতীয় দিন রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পৌনে ছয়টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ২৮তম সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ছাত্রলীগের কমিটি হচ্ছে এমন সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তী নেতৃত্ব স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে কাউন্সিলরদের (ভোটার) প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করার নির্দেশ দেন। এরপর নির্বাচনের প্রক্রিয়া কেমন হবে, এ নিয়ে শনিবার বিকেলে চারটায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সাবেক শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন। তারপরও শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট সোহাগ জাকির প্যানেল ঘোষণা করে। সিন্ডিকেট প্যানেলের বাইরে শক্তিশালী কোনো প্যানেল বা প্রার্থী না থাকায় অনেকটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ায় ‘নিয়ম রক্ষার এই নির্বাচনে’ শীর্ষ দুই নেতা হয়ে যান সোহাগ ও জাকির। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন।
কাউন্সিলরদের ভোট শেষে ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, রাতের আঁধারে প্রেস রিলিজ দিয়ে কমিটি দেয়া হয়নি। নাম প্রকাশ না করে একটি ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘অনেকে রাতের আঁধারে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কমিটি দেয়, আমরা দিইনি।
অন্যদিকে, বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে। তাহলে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
নির্বাচিত হয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রলীগকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, সময়ের সাহসী সন্তানেরা ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। আগামী দিনগুলোতে যেন তারা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আসে আমি সেই চেষ্টা করব।
এক নজরে পরিচিতি
সাইফুর রহমান সোহাগ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়েই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে মাস্টার্সে পড়ছেন। ২০০৫-০৬ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সদ্য বিদায়ী কমিটির তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। বাড়ি মাদারীপুর সদর থানায়। মাদারীপুর ইউআই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বাবা এইচএম আবদুর রহমান স্কুল শিক্ষক, মা মর্জিনা খানম পরিবার পরিকল্পনা সহকারী (অবসরপ্রাপ্ত)।
জাকির হোসেন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানেই এমফিল করছেন। ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে জিয়া হল ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ। তিনি উত্তর গোয়ালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত, হাজী ইমজাদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী, ৭ম ও ৮ম নারায়ণগঞ্জ ইব্রাহীম আলম চাঁন উচ্চ বিদ্যালয় এবং নরসিংদী থেকে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক পাস করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে। বাবা আবদুল জলিল স্কুল শিক্ষক, মা আমিনা বেগম গৃহিণী।