জার্মানিতে প্রথম ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু
জার্মানিতে ফ্রাঙ্কফুর্টে ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি মেনে মুসলমানদের জন্য প্রথম সুদমুক্ত ব্যাংক চালু হয়েছে। এরকম ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা বহু মুসলিম দেশেই চালু আছে। যার মূল কথা – সুদ নেয়া বা দেয়া যাবে না। জার্মানিতে প্রায় ৪০ লক্ষ মুসলমান বাস করে। গত সোমবার ব্যাংকের লেনদেন শুরু হয়। প্রচলিত ব্যাংকের সঙ্গে মুসলমানদের জন্য স্থাপিত এই ইসলামি ব্যাংকের পার্থক্য হলো ইসলাম ধর্মের নিয়মনীতি মেনেই তাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা। সুদের কারণে লেনদেনের ঝুঁকিটা একপেশে হয়ে যায় বলে মনে করা হয়। এসব কারণে ইসলামী ব্যাংক ঝুঁকিমুক্ত বলে ধারণা করা হয়। কোরআনে ব্যবসা বাণিজ্যের উল্লেখ থাকলেও সুদকে শয়তান সুলভ মনে করা হয়। এদিকে, মানহাইমের ‘কুভেত তুর্ক’ ব্যাংক সুদের কারবার করছে না। লেনদেনটা হচ্ছে কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে। কোম্পানি লাভ বা লোকসান যাই করুক, ব্যাংকের তাতে অংশ থাকবে।
ব্যাংকের প্রধান উগুরলু সয়লু জানান, এই বিশেষ মডেলের ব্যাংক এমন কোন ব্যবসার সঙ্গে নিজেকে জড়াবেনা যা কিনা মদ, শুকরের মাংস, পর্নোগ্রাফি বা অস্ত্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। তাছাড়া সমাজের ক্ষতি করবে এমন সব ব্যবসা থেকেই দূরে থাকবে এই ব্যাংক।
ব্যাংক-প্রধান সয়লু জার্মান সংবাদ সংস্থাকে জানান, সর্বস্তরের ব্যাংকের লেনদেনের জন্য সুদের হার একই।ব্যাংক থেকে যারা ঋণ নিতে চায়, তাদের জন্য দুটি উপায় খোলা। এক, কোন সুনির্দিষ্ট প্রকল্প – যেমন ধরা যাক একটা সুপার মার্কেটের অর্থায়নের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। যার অর্থ কাস্টমারের অংশ থাকবে ঐ ব্যবসায়। লাভ এবং ক্ষতি দুটোরই দায়ভাগ নিতে হবে তাকে। অথবা ধরা যাক কেউ বাড়ি কিনতে চায়। ব্যাংক নিজে কিনবে সেই পছন্দের বাড়ি। এবং তারপর বিক্রি করবে সেই বাড়ি কাস্টমারের কাছে। কেনার টাকা শোধ করা হবে কিস্তিতে। কিন্তু এ ধরনের অর্থায়নে সমস্যা আছে। বাড়ি কেনাবেচার প্রক্রিয়ায় দু’বার প্রফিট ট্যাক্স দিতে হবে এবং তাতে অর্থায়নটা হয়ে উঠবে অনেক ব্যয়বহুল।
ফ্রান্স এবং ব্রিটেনে ইসলামী ব্যাংক প্রবর্তনের কাঠামোগত শর্তগুলো তৈরি আছে। জার্মানিতে তা নেই। তবুও জার্মানির অর্থ প্রতিষ্ঠানের তদারকি দপ্তর বাফিন এরকম ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিরোধী নয়। জার্মানিতে ব্যাংক ব্যবসার বিভিন্ন দিক দেখাশোনা করে বাফিন। ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ব্যাংকের কাজকর্ম ওপর নজরদারির দায়িত্ব বাফিনের।
বাফিনের আন্তর্জাতিক বিভাগের কর্মকর্তা ইয়োহানেস এঙ্গেলেসর ভাষ্য, ইসলামিক ব্যাংক ব্যবস্থার ইস্যুটি নিয়ে বাফিন বেশ ব্যস্ত আছে। একটি ব্যাংক ৫ বছর আগে জার্মানির বাফিনের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে চালু করে। অর্থনৈতিক মন্দার অনেক অজানা উত্তর হয়তো তার মধ্যে থাকতে পারে। -ডয়েচেভেলে