ব্রিটিশ সংসদে পর্নো দেখার হিড়িক
সংসদ ভবন হলো একটি দেশের নাভি। এই নাভিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। জাতীয় যে কোনো উন্নয়ন কিংবা ক্রান্তি প্রশ্নে দেশের সংসদ ভবন থেকেই প্রথম পদক্ষেপ নেয়া হয়। অর্থাৎ সংসদে বসা মানুষগুলো একটি দেশের সার্বিক প্রাণ-প্রকৃতি ও প্রতিবেশের পক্ষে নীতি-নির্ধারণ করার জন্য বসেন এবং কাজ করেন। কিন্তু সত্যিই কি সংসদে বসে মন্ত্রী, এমপিরা দেশের মানুষের কথা ভাবেন? মন্ত্রী-এমপি সাহেবরা এখন আর সংসদে বসে মানুষের কথা ভাবেন না। উল্টো ব্যক্তিগত সম্পত্তি উন্নয়ন ভাবনাতেই অধিক আচ্ছন্ন থাকে তাদের মন।
সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে দেখা যায়, গতবছর সংসদ চলাকালীন সময়ে সংসদ সদস্যরা দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার বার তাদের ব্যবহৃত কম্পিউটার দিয়ে বিভিন্ন পর্নো ওয়েবসাইটে ঢোকেন ও চেষ্টা করেন। এছাড়াও চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই শুধু বিয়াল্লিশ হাজার বার পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটগুলোতে ঢোকা হয় সংসদের কম্পিউটার থেকে। ব্রিটেনের আয়কর বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা জোনাথন ইসবে এবিষয়ে টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘ওয়েবসাইটগুলো পপআপের কারণে অনেক সময় ব্যবহারকারীদের এ ধরনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে বাধ্য করে। কিন্তু তারপরেও পর্নো ওয়েবসাইটে ঢোকার সংখ্যা উদ্বেগজনক। সংসদে প্রতিটি মুহূর্ত খুব ব্যয়বহুল, অনেক আয়করদাতাদের টাকা থাকে এর পেছনে। চারদেয়ালের মাঝে এসব কাজ করে ওই অর্থ ব্যয় করা ঠিক নয়। আয়করদাতাদের প্রদত্ত অর্থ এভাবে ব্যবহার করা সঠিক নয়।’ এদিকে ২০১৩ সালে সংসদে পর্নো দেখার পরিসংখ্যান বিষয়ে ব্রিটেনের হাউস অব কমন্সের এক মুখপাত্র জানান, ‘আমরা এই তথ্যকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য হিসেবে নিচ্ছি না। আজকাল বিভিন্নভাবেই এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ হয়ে যেতে পারে।
এরজন্য অনেকসময় নেটওয়ার্ক দায়ি, ওয়েবসাইট নির্মাতা বা তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও এই সমস্যা হতে পারে। কিছুদিন আগেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইন্টারনেট থেকে পর্নো সরিয়ে দেয়ার কথা বলেছিলেন। আর ওই বক্তব্যের কদিন পরেই টেলিগ্রাফ এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। নিয়মিত পর্নো দেখলে শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, আর এই প্রভাবের কারণে শিশুদের পরবর্তী জীবনে নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়।