মধ্য আফ্রিকায় চলছে মুসলমান উচ্ছেদ
রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগে মধ্য আফ্রিকায় বসবাসরত মুসলমানদের জাতিগতভাবে নির্মুল করা হচ্ছে। আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
‘পরিচিত নির্মুল : মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে জাতিগতভাবে মুসলমানদের নির্মুল’ শীর্ষক প্রতিবেদনের বিষয়ে বার্তা সংস্থা আল জাজিরাকে অ্যামিনেস্টির জ্যেষ্ঠ দুর্যোগ মোকাবেলা উপদেষ্টা জোয়ান ম্যারিনার জানান, মধ্য আফ্রিকার পশ্চিমে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর অর্ধেক মুসলমান বাসিন্দারা নির্যাতনের শিকার এবং তাদেরকে ধর্মত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের সেনাদের প্রহরায় মধ্য আফ্রিকাজুড়ে সাতটি ছিটমহলে ৩০ হাজারের বেশি মুসলমান বসবাস করে। তবে এর বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেসব মুসলমান বসবাস করছে তারাই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
জোয়ান ম্যারিনার বলেন, ‘তাদের মুসলমান হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়ার অনুমতি নেই। ছিটমহলের বাইরে গেলে তারা প্রার্থণা করতে পারে না, যেসব পোশাক পরলে মুসলমান হিসেবে বোঝা যায় সেগুলি পরিধান করতে পারে না। তাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে বলাকা বিরোধী যোদ্ধাদের সঙ্গে প্রতিদিন রুটিনমাফিক আলোচনার ওপর।’
ম্যারিনার আরও জানান, তাদের অনেককে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করা হয় অথবা সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নিপীড়নের শিকার হতে হয়।
২০১৩ সালের মার্চে মুসলমান নেতৃত্বাধীন সালেকা বিদ্রোহীরা রাজধানী বাঙ্গুই দখল করে। সালেকার নির্যাতনের ফলে নতুন নেতৃত্বে বিরুদ্ধে অ্যান্টি বলাকা বা বলাকাবিরোধী নামে একটি সংগঠনের জন্ম হয়। এই সংগঠনের সদস্যরা সবাই খ্রিস্টান ও সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী। তারা সালেকার প্রতি সহানুভূতিশীল মুসলমান সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
গত এপ্রিলে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিক সামান্থা পাওয়ার জানিয়েছিলেন, মধ্য আফ্রিকায় এ পর্যন্ত প্রায় ৪শ ৩৬ টি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে। শুক্রবারের প্রতিবেদনে অ্যামিনেস্টি জানিয়েছে, রাজধানী বাংগুইর বাইরে এবং কার্নট শহরের অবস্থিত মসজিদগুলির একটিও পুননির্মান সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিগত সহিংসতার স্পষ্ট চিত্র হচ্ছে দেশটির মসজিদগুলি ধ্বংস করা। ২০১৩ সালের মার্চ থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় এ পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।