যে কারনে ব্রিটেনে প্রবেশ করতে চায় অবৈধ ইমিগ্রেন্টরা

Immigrantsসৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ: হঠাৎ ক্যালাইস মাইগ্রেশন পয়েন্ট দিয়ে বানের পানির মতো মানব স্রোত কেন আসছে ব্রিটেনে ? এ নিয়ে নানা মুনীর নানা মত। বিশেষজ্ঞরা  বলছেন গোটা আফ্রিকান অঞ্চলের অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার কথা। সরকার বিরোধিরা ক্যামেরনের সমালোচনা করলেন এই সমস্যা যথাযথভাবে ট্যাকল না করার ব্যর্থতার জন্য। কিন্তু থেরেসা মে ও ক্যামেরন ফ্রান্সের সাথে মিলে যৌথভাবে নানা কঠিণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেও এই মানব স্রোতের মধ্যে ভাটার টান ধরছেনা, বরং বেড়েই চলছে। কিন্তু কেন ? টেলিগ্রাফের এক গোপন তদন্তে যে গোপন সত্য ধরা পড়েছে, আর তারই ভিত্তিতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এক ইনভেস্টিগেশনে দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যে সব জবলেস তরুণ আছেন, তাদেরকে ইনসেন্টিভ দেয়া হচ্ছে, এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে মাইগেশন করার জন্য, জবের জন্য। সেক্ষেত্রে তাদের যাতায়াত ভাতা, ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রেনিং ভাতা, ক্যাশ এলাউন্স সহ যাবতীয় ফ্যাসিলিটি প্রোভাইড করা হচ্ছে, আর এই সুযোগ নিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশ সহ তুলনামূলকভাবে বেশী পরিমাণে জবলেস তরুণ তরুণী ব্রিটেনে পাড়ি দিচ্ছে এবং পরিসংখ্যানেও দেখা গেছে ব্রিটেন এই স্কীমের আওতায় না থেকে অধিক সংখ্যক জবলেস লোক চাকুরী পেয়েছেন, যা তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে আরো অধিকহারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই স্কিমের নাম হলো- ইউর ফার্স্ট ইউরেস জব। এই স্কিমের আওতায় একজনকে ৫,০০০ ইউরো বা ৩,৫০০ ব্রিটিশ স্টার্লিং ক্যাশ এলাউন্স দেয়া হচ্ছে রিলকেশনের জন্য।
এছাড়াও এই স্কিমে যারা অংশ গ্রহণ করছে, তাদের ৫০০ মাইলের ভিতরে ট্রাভেল এলাউন্স ৩৫০ ইউরো, ইন্টারভিউ এর জন্য ৫০ ইউরো,  ইউকেতে রিলকেশনের জন্য ১,২৭০ ইউরো,  ভাষা শিক্ষার জন্য ১,০০০ ইউরো  প্রদান করা হচ্ছে।
এর বাইরেও  সোশিও-ইকোনোমিক গ্রাউন্ডে ৫০০ ইউরো, আর ব্রিটিশ বিজনেস এর একজন চাকুরীজীবী আরো ১,০৬০ ইউরো ক্লেইমের সুযোগ থাকছে।
এই স্কিমে ইতোমধ্যেই  বিগত ২০১২ সালে ১,১৭২ জন অত্র অঞ্চলের ইউকেতে অভিবাসিত হয়েছেন। অন্য এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৩,৩৮৭ জনের মধ্যে ৩৪.৭ % ব্রিটেনে চাকুরী পেয়েছেন, পক্ষান্তরে এ ক্ষেত্রে স্কিমের আওতায় থেকেও জার্মানির স্থান দ্বিতীয়,  অথচ মাত্র ১% ব্রিটিশ এই স্কিমের আওতায় চাকুরী পেয়েছেন।
ব্রিটেনের ফরেন সেক্রেটারি ফিলিপ হ্যামন্ড ক্যালাইস ক্রমবর্ধমান ক্রাইসিস সম্পর্কে বলেন, এই উইকএন্ডে এই সংকট আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করছেন। মানুষ আরো আসবে বলে রিপোর্ট রয়েছে। তিনি অতিরিক্ত সিকিউরিটি ফোর্স সেখানে বাড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এর বাইরেও অতিরিক্ত ১০০ গ্রাউন্ড ফোর্স ইউরো ট্যানেলের ভিতরে নিরাপত্তার জন্য নিরোজিত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ফ্রান্সের সাথে আমরা যৌথভাবে কাজ করলেও ইউরোপীয় এই স্কিমের তিনি সমালোচনা করে বলেন এতে লোকজন এনকারেজ হচ্ছে ব্রিটেনে আসার জন্য।
ইউকিপের এমইপি জেন কলিন্স- যিনি এই ফিগার বের করেছেন, তিনি বলেন, ব্রিটেনের জনগনের ট্যাক্সের পয়সা এই খাতে যাচ্ছে। ব্রাসেলস অনবরত ব্রিটেনের উপর প্রেসার করছে যাতে ইইউ এই স্কিমের সমান সুযোগ ব্রিটেনে অব্যাহত ও খোলা হয় অভিবাসী মুভ করার জন্য।
ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র বলেছেন, ক্যালাইস ক্রাইসিস কেন বুঝতে আমাদেরকে অত্র অঞ্চলের গ্রিস ও ইটালিকে চাপ দিতে হবে ৪০ হাজার অভিবাসী যাতে মুভ করার সুযোগ দেয়া হয় এবং ব্রিটেন এই স্কিমের বাইরে রয়েছে, এই স্কিমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
অবশ্য ২০০৮ ও ২০১০ সালে লেবারের ইমিগ্রেশন মিনিস্টার ছিলেন, ফিল হউ বলেছেন, যদিও এই সমস্যা রুখে দেয়া কঠিণ তথাপি অভিবাসীদের কাছে যদি এই সিগন্যাল দেয়া হতো ক্যালাইসে গেলেই তাদের গ্রেপ্তার ও ফেরত পাঠানো হবে, তাহলে তারা ক্যালাইসে আসতে উৎসাহিত হতোনা।
ব্রিটিশ সরকার গতকাল ল্যান্ডলর্ডদের কড়াকড়ি আরোপ করে নতুন বিল আনছেন, যাতে অবৈধ অভিবাসীদের বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করা হয় নতুবা ৫ বছরের কারাদন্ড।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button