তৈরি হচ্ছে হ্যাকার প্রুফ ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ
রয়্যাল নেভির পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধযানের নকশাকারের মতে যুদ্ধজাহাজগুলো আধুনিক প্রযুক্তির উপর এত বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে যে সাইবার হামলা থেকে সেগুলোকে রক্ষা করা অন্যতম উচ্চ অগ্রাধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামীতে সাগরে সাইবার যুদ্ধে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজগুলোকে হ্যাকার প্রুফ করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বিএই সিস্টেমের টাইপ-২৬ কর্মসূচির প্রধান জিওফ সারলি বৃহস্পতিবার দি টেলিগ্রাফকে বলেন, অধিকতর প্রচলিত হুমকির কাছে সাইবার হামলা সমান গুরুত্বপূর্ণ হুমকি এবং এমন এক হুমকি যা আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। জাহাজগুলো যাতে এ হুমকির মোকাবেলা করতে পারে সেভাবেই নকশা করা হচ্ছে। টাইপ-২৬ বৈশ্বিক যুদ্ধজাহাজগুলো নৌবাহিনীর আগামী প্রজন্মের যুদ্ধজাহাজের প্রতিনিধিত্ব করছে। যদিও এখন পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (এমওডি) ফরমায়েশ এখনো পায়নি কিন্তু বিতর্কিত ব্রিটিশ আর্মস ফার্ম এ সব জাহাজের নকশা প্রণয়ন করে তা নির্মাণ করতে যাচ্ছে।
সারলি বলেন, আধুনিক অনবোর্ড কম্পিউটার সিস্টেমের বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধের হামলার উদ্ভবশীল বিপদকেও অবশ্যই সাগরপথে জাহাজ চলাচল কার্যক্রমের প্রচলিত বিপদের সাথে গণ্য করতে হবে।
তিনি বলেন, সাইবার হামলা অবশ্যই একটি প্রকৃত হুমকি, এটা এমন কিছু যা আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে হবে বিশেষ করে যুদ্ধ ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পাওয়ার ও প্রপালশন ক্ষেত্রে।
সারলি বলেন, একটি সফটওয়্যার থেকে, যোগাযোগের দৃষ্টিকোণ থেকে এ সব সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বহু রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, যুদ্ধজাহাজের উপর সাইবার একটি ঝুঁকি, যেমন তা সামরিক বাহিনী ও সহযোগী শিল্পসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও নাগরিক সমাজের এক বিরাট এলাকাকে প্রভাবিত করে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি সাইবার হুমকি ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রের বিপুল এলাকাকে প্রভাবিত করে বলে আমরা স্বীকার করি, সে কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি প্রকৃত উদ্ভবশীল হুমকি।
এ বছরের আগের দিকে ‘দি ফিউচার অব মেরিটাইম সাইবার সিকিউরিটি’ শীর্ষক ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রিপোর্টে যুক্তি দেখানো হয় যে অত্যন্ত স্বল্প খরচে কার্যকর সাইবার হামলা চালানো যেতে পারে বলে বিপুল বিনিয়োগও তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না।
রিপোর্টে বলা হয়, এর ফলে তা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো বা জলদস্যুদের মতো অ-রাষ্ট্রীয় শক্তিগুলোর জন্য জাহাজ চলাচল অচল করে দেয়ার দরজা খুলে দিয়েছে।
সাইবার হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ৬ হাজার টনি টাইপ-২৬ যুদ্ধজাহাজগুলো রয়্যাল নেভির বিশ্বব্যাপী পরিচালনার ক্ষেত্রে বিপ্লব সৃষ্টি করবে। প্রথম ৩টি জাহাজের মৌলিক উপকরণের জন্য প্রদর্শিত ব্যয় ৮৫ কোটি ৯০ লাখ পাউন্ডের (১শ’৩৩ কোটি ডলার) প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য আধুনিক সমুদ্র মঞ্চের একটি নৌবহর পাবে যা দিয়ে ২০১৯ সালে সাবমেরিন অনুসন্ধান ও ধ্বংস করতে পারবে। এ যুদ্ধজাহাজগুলোতে হ্যাঙ্গার সুবিধা থাকবে যা একটি চিনুক হেলিকপ্টার বহন করতে পারবে অথবা সামুদ্রিক বা স্থল যান বহনের সুবিধাও থাকবে, অতিরিক্ত সৈন্য বহন করতে পারবে এবং ড্রোনও পরিচালনা করা যাবে।