গৃহহীনদের সেবায় লন্ডনের মসজিদ
লন্ডনের একটি মসজিদ কর্তৃপক্ষ মহানগরীর গৃহহীনদের জন্য মসজিদের দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। তারা তাদের জন্য সপ্তাহে একদিন হটমিল ও মনস্তাত্ত্বিক সমর্থনের ব্যবস্থা করেছেন। বৃহস্পতিবার ব্যাগ ও ব্যাকপ্যাক নিয়ে ব্রিটেনের রাজধানীর উত্তরাংশে ফিনসবারি পার্ক মসজিদে প্রায় ২০ জন লোক জড়ো হন। তাদের কষ্ট ও আশার কথা শোনার জন্য সেখানে সমাজকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মসজিদের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলি বলেন, এ প্রকল্পটি কয়েকটি আন্তঃধর্মীয় উদ্যোগের অংশ যার লক্ষ্য আশপাশের কমিউনিটিকে সেবা প্রদান।
তিনি বলেন, মসজিদটি মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবার জন্য কিছু কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, সামাজিক একীভূতকরণে মুসলমানদের একটি ভূমিকা আছে। লন্ডনের বরো অব ইসলিংটনে অবস্থিত মসজিদটি গত কয়েক বছর ধরে তাকে জড়িয়ে সৃষ্ট বিতর্কের ছায়া থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে। এ মসজিদের সাবেক ইমাম আবু হামজা আল-মাসরির নামের সাথে মসজিদটির নাম জড়িত ছিল। এ বছরের প্রথম দিকে নিউইয়র্কের একটি আদালত সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়। এর আগে সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগে তিনি আট বছর যুক্তরাজ্যের কারাগারে ছিলেন। ২০১২ সালে তাকে সন্ত্রাসের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যার্পণ করা হয়। ফিনসবারি পার্ক মসজিদের সাথে ‘জুতা বোমা হামলাকারী’ রিচার্ড রিড ও ৭-৭ বোমা হামলাকারী জারমেইন লিন্ডসের নাম জড়িত। কারণ তারা সেখানে ধর্মীয় বক্তৃতা শুনতে গিয়েছিল বলে খবরে বলা হয়েছিল। ২০০৫ সালে একটি নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি মসজিদের পাশাপাশি ভবনটিকে একটি কমিউনিটি সেন্টারে পরিণত করার ব্যবস্থা নেয়। সেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সামাজিক একীভূতকরণ প্রভৃতি বিষয়ে নিয়মিত আন্তঃধর্মীয় আলোচনার আয়োজন করা হয়। মসজিদটিতে জুমার নামাজে প্রায় ২ হাজার মুসল্লি যোগদান করেন।
মসজিদের একজন মহিলা স্বেচ্ছাসেবী ইশিয়া আল-জাজিরাকে বলেন, গৃহহীনরা এ মসজিদে সামাজিক নিরাপত্তা খুঁজে পাচ্ছেন রাস্তায় যার অভাব রয়েছে। তিনি জানান, সংগঠকরা উন্নতমানের খাবার দেয়ার চেষ্টা করছেন। অতিরিক্ত কিছু সম্পদ পেলে তা নিয়মিতভাবে দেয়ার চেষ্টা করা হবে। সরকারি তথ্যমতে, ২০১৫ সালে প্রায় ২৮ হাজার গৃহহীনের আবেদন পাওয়া গেছে যার মধ্যে ১৩ হাজার ৫শ’ আবেদন গৃহহীন হিসেবে গৃহীত হয়েছে।