খাদ্যদ্রব্য নষ্টে ১ নম্বরে ব্রিটিশরা
অনগ্রসর দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ খাদ্যাভাবে ধুকে ধুকে মরছে। বেঁচে থাকার মতো খাবারের জন্য রীতি মতো লড়াই করছে। ঠিক সেই সময় অগ্রসর দেশগুলো টনকে টন খাবার অকারণেই নষ্ট করছে। ইউরোপিয়ানরা এ ক্ষেত্র সবচেয়ে এগিয়েছ।
ইউরোপীয় কমিশনের সাহায্যপ্রাপ্ত গবেষকদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরো জোনের দেশগুলো বছরে দুই কোটি ২০ লাখ টন খাবার নষ্ট করে। আর সবচেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করে ব্রিটিশরা। প্রত্যেক ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদিন এক টিন করে শিমের বীচি (বিন) নষ্ট করলে যে পরিমাণ খাবার হয় ব্রিটিশরা সেই পরিমাণ খাবার নষ্ট করে।
সমীক্ষা চালানো ৬টি দেশ হল- ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি ও রোমানিয়া। এসব দেশের তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি নষ্ট করা হয় শব্জি, ফল এবং শস্যদানা, কারণ এগুলো ঘরে বেশিদিন রাখা যায় না। কিন্তু বিপুল পরিমাণ মাংসও ফেলে দেয়া হয় এবং পানি ও নাইট্রোজেনের উৎসের জন্য এটিই বৃহত্তর ক্ষতির কারণ।
এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটার্স নামের সাময়িকীতে বুধবার ওই সমীক্ষাটি প্রকাশিত হয়। এতে ভোক্তাদের নষ্ট করা খাবারের ফলে লুপ্ত হওয়া পানি ও নাইট্রোজেনের উৎস বিশ্লেষণের জন্য ছয়টি দেশের তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করা হয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছ, যে পরিমাণ খাদ্য নষ্ট করা হয় তার ৮০ শতাংশই এড়ানো সম্ভব। এমনকি রোমানিয়ায় খাবার নষ্ট করার পরিমাণ সবচেয়ে কম। কিন্তু তারাও প্রচুর খাবার নষ্ট করে। তারা প্রত্যেকে প্রতিদিন একটি করে আপেল নষ্ট করার সমান খাবার নষ্ট করে।
গবেষকরা বলেন, লোকজনকে আরও সতর্কতার সঙ্গে কেনাকাটা করা এবং তাদের খাবার গ্রহণের বিষয়ে পরিকল্পনা করার শিক্ষা দেয়া হলে তা তাদের খাবার ফেলে দেয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করবে, খাবারের পেছনে ব্যয় কমবে এবং পরিবেশের উপর নষ্ট খাবারের বিরূপ প্রতিক্রিয়া কম হবে।
সমীক্ষায় নেতৃত্ব দানকারী ইউরোপীয় কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের ডেভি ভ্যানহ্যাম বলেন, প্রায়ই খাবার ভালো থাকতেই ফেলে দেয়া হয় এর বিক্রির তারিখ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে। এসব এড়ানো সম্ভব বলে এ বিষয়ে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইইউভুক্ত ২৮টি দেশের মধ্যে মাত্র ছয়টি দেশের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সমীক্ষা চালানোর কারণ হলো অন্যান্য দেশের তথ্য-উপাত্ত তেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়।