গ্রিসকে ৮ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো ঋণ দেয়া হবে
ইউরোজোনের নেতাদের সম্মতিক্রমে আগামী তিন বছরের জন্য গ্রিসকে মোট ৮ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো ঋণ দেয়া হবে। নতুন ঋণচুক্তিটি গ্রিসের জন্য বেশ কঠোর হবে। গ্রিসকে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউরো ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ইসিবির ঋণ পরিশোধ এবং অন্যান্য সংস্কারের জন্য গ্রিসকে ৮৫ বিলিয়ন ইউরোর (৯৪ বিলিয়ন ডলার) প্রণোদনা কিনা, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার বিকালে ব্রাসেলসে বৈঠকে বসেছেন ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রিসের সঙ্গে তৃতীয়বারের মতো বেইলআউট চুক্তির প্রাথমিক শর্তগুলো নিয়ে গত মাসেই একমত হয় দাতাগোষ্ঠী। এখন চলছে শর্তগুলোর অধীনে থাকা বিভিন্ন চুক্তি এবং অন্যান্য বিষয়ে গ্রিক পার্লামেন্টে ধারাবাহিক অনুমোদন দেয়ার পর্ব। আর এর প্রতিটি ধাপেই নজিরবিহীন বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সিপ্রাসকে। ইউরোজোনের সঙ্গে গ্রিসের করা তৃতীয় বেইলআউট চুক্তির আওতায় অর্থ ছাড় পেতে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কর বৃদ্ধি, পেনশন কর্তন এবং চাকরিবিধিতে পরিবর্তন আনার পথ বেছে নেন সিপ্রাস। দাতাদের শর্ত মেনে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্যাকেজ অর্জনের পর নিজ দলেই বিরোধিতার মুখে পড়েন তিনি।
এদিকে সংস্কার প্রস্তাবের ভোটে এবারো জিতেছেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) কাছ থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধের সর্বশেষ সময়সীমাকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রিসের পার্লামেন্টে তুমুল বিতর্কের পর দাতাদের শর্ত মেনে নেয়ার পক্ষেই ভোট দেন পার্লামেন্টের বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা। তবে প্রতিবারের মতো এবারো নিজ দল সিরিজা পার্টির পক্ষ থেকে বিদ্রোহের মুখোমুখি হতে হয় সিপ্রাসকে। উল্লেখ্য, গ্রিসের সঙ্গে বেইলআউট চুক্তির প্রাথমিক শর্তগুলো নিয়ে গত মাসেই একমত হয় দাতা গোষ্ঠী। আর এখন চলছে শর্তগুলোর অধীনে থাকা বিভিন্ন চুক্তি এবং অন্যান্য বিষয়ে গ্রিসের পার্লামেন্টে ধারাবাহিক অনুমোদন দেয়ার পর্ব।
এই প্রস্তাব পাসের ফলে খুব শিগগিরই দাতাদের ঋণ সহায়তা পাবে গ্রিস। এর বিপরীতে কর বৃদ্ধি এবং সরকারি ব্যয় কমাতে হবে গ্রিস সরকারকে। ঋণের কঠোর শর্ত মেনে নেয়ার ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পার্লামেন্টে গ্রিক নীতিনির্ধারকদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং তর্কবিতর্ক শুরু হয়, যা গড়ায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত। দীর্ঘ ওই বিতর্কের পর অবশেষে গ্রিক পার্লামেন্টের অন্তত ২২২ জন সদস্যের ভোট পাস হয় প্রস্তাবটি। তবে সাবেক অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারুফাকিস এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সিপ্রাসের বামপন্থী সিরিজা পার্টির প্রায় ৪০ আইনপ্রণেতা এই চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেন। আর ১১ জন এমপি ভোটদানে বিরত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবারের ভোটের পর রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, পার্লামেন্টে নিজ দলের পক্ষ থেকে আসা বিদ্রোহটাই ছিল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিদ্রোহ। সিপ্রাস এই পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টে আস্থা ভোট ডাকতে পারেন। নিজ দল এবং প্রধানমন্ত্রীর এই দূরত্ব গ্রিসকে একটি আগাম নির্বাচনের দিকেও ঠেলে দিতে পারে।