৫৪ আরোহী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বিমান বিধ্বস্ত
ইন্দোনেশিয়ার দুর্গম পাহাড়ি-বনাঞ্চলীয় প্রদেশ পাপুয়ায় ৫৪ জন যাত্রী নিয়ে রোববার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসী জানিয়েছেন, সেখানকার একটি পাহাড়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানটির ধ্বংসাবশেষ তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন। ৫৪ যাত্রীর সবাই নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে দেশটির জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সংস্থা টুইটার বার্তায় জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাপুয়ার রাজধানী জায়াপুরার সেনতানি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর স্থানীয় সময় বেলা তিনটার দিকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে ট্রিগানা এয়ারলাইনসের এটিআর ৪২ উড়োজাহাজটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। উড়োজাহাজটি একই প্রদেশের ওকসিবিলে যাচ্ছিল।
টুইটার বার্তায় আরও বলা হয়, ৪৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক, পাঁচটি শিশু ও পাঁচজন নাবিক নিয়ে উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের আধা ঘণ্টা পর নিখোঁজ হয়। ৪৫ মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজটির গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জে এ বারাতা বলেন, বেলা তিনটার কিছু সময় পরই উড়োজাহাজটির ওকসিবিল বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল।
জে এ বারাতা এএফপিকে বলেন, ‘উড়োজাহাজটির কী হয়েছে, তা আমরা নিশ্চিত নই। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করছি। সেখানে বর্তমানে আবহাওয়া খুবই খারাপ। সেখানকার আকাশ অত্যন্ত মেঘাচ্ছন্ন ও অন্ধকার, যা পাহাড়ি ওই এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য সহায়ক নয়।’
অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সংস্থার প্রধান বামবাং সোয়েলিস্টিও টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। আমরা শুধু এটুকুই বলতে পারি যে, উড়োজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।’
দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চলীয় পাপুয়ায় পরিবহন যোগাযোগের জন্য সাধারণত আকাশপথ ব্যবহৃত হয়। এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা মান না থাকায় ২০০৭ সাল থেকে ট্রিগানা এয়ারলাইনস ইউরোপীয় ইউনিয়নের কালো তালিকায় রয়েছে।
গত ২৮ ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বিমান সংস্থা এয়ারএশিয়ার একটি বিমান ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে ১৬২ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনার দুইদিন পর জাভা সাগরে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় বিমানে থাকা ১৫৫ জন যাত্রী ও সাতজন ক্রুর সবাই নিহত হয়েছিল। এরপর গত জুলাইয়ে একটি পুরনো সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শতাধিক লোক নিহত হয়।
এর আগে গত বছরের ৮ মার্চের প্রথম প্রহরে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিং যাওয়ার পথে ২৩৯ জন আরোহীসহ মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিমান নিখোঁজ হয়। এখন পর্যন্ত ওই বিমানের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি ভারত মহাসাগরে একটি বিমানের ডানার অংশ পাওয়া যায়, যা মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমানের বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।