বাক-স্বাধীনতার নামে ধর্ম অবমাননা ঠিক নয়
জালাল উদ্দিন ওমর: কিছু ব্যক্তি নিয়মিতভাবে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে বক্তৃতা আর লেখালেখি করছেন। এরা নিজেদেরকে আধুনিক, প্রগতিশীল, মুক্তমনা বলে পরিচয় দেয়-আর মুক্তচিন্তা ও বাক-স্বাধীনতার কথা বলে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করেন। তারা ব্লগে ইসলামী মূল্যবোধ, বিশ্বাস এবং এর বিধিবিধানকে কটাক্ষ করে লেখালেখি করেন। তারা এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, পালনর্কতা এবং নিয়ন্ত্রণকর্তা আল্লাহ এবং তার প্রেরিত মানবতার মুক্তির দূত, সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ, অবজ্ঞাপূর্ণ মন্তব্য করেন। একই সাথে তারা পবিত্র কোরআন-হাদিস এবং ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। এসব ব্যক্তির ইসলাম অবমাননার কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। আল্লাহ, মহানবী (সা.) এবং কোরআন-হাদিসসহ ইসলামকে অবজ্ঞার ঘটনায় তাদের হৃদয়ে চলছে রক্তঃক্ষরণ। একজন মুসলিম হিসেবে মহান আল্লাহ, মহানবী (সা.) এবং কোরআন-হাদিসকে অপমানের ঘটনায় আমিও অত্যন্ত ব্যথিত এবং মর্মাহত। আমি নিজেও এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিলের একজন। আমি এই ধরনের অন্যায়, অসভ্যতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে এর জন্য দায়ী এবং এর সাথে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সাথে সাথে এ ধরনের গর্হিত কাজ বন্ধ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য গণতন্ত্র, সভ্যতা ও মানবাধিকারের প্রবক্তা বলে দাবিদার একটি জনগোষ্ঠী ব্লগারদের এই অপকর্মকে মুক্তচিন্তা এবং বাক-স্বাধীনতা হিসেবে অভিহিত করেন এবং তাদেরকে সমর্থন করেন। তারা বাক-স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে এই অপকর্মের পক্ষে সাফাই গেয়ে থাকেন। একইভাবে তারা বাক-স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের ধোঁয়া তুলে এই ব্লগারদের পক্ষে কথা বলেন। এসব ব্লগার এবং তাদের সমর্থনকারীদের উদ্দেশে বলছি অপরের ধর্ম, ধর্মবিশ্বাস এবং ধর্মের প্রবক্তা এবং এর সম্মানীত ব্যক্তিদের অপমান ও অবজ্ঞা করাটা কখনো বাক-স্বাধীনতা হতে পারে না। এটা কখনো মুক্তচিন্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা হতে পারে না। বরং এটা হচ্ছে চরম অন্যায়, অভদ্রতা, অসভ্যতা এবং বিকৃত রুচির পরিচায়ক। আর এ ধরনের গর্হিত কাজ কখনো সুফল বয়ে আনে না। মনে রাখা দরকার, যে কোনো ব্যক্তির যে কোনো ধর্মকে মানার বা অস্বীকার করার অধিকার রয়েছে। স্বয়ং স্রষ্টাও মানুষকে সে অধিকার দিয়েছেন। কিন্তু অপরের ধর্মকে অবজ্ঞা করার অধিকার কারো নেই।
বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় সাতশ’ কোটি মানুষের বাস। এর প্রায় ৯৯% মানুষই কোনো না কোনো ধর্মের অনুসারী। হয়তো কারো মাঝে ধর্মের প্রভাব কম আর কারো মাঝে বেশি। কিন্তু এককথায় তারা ধর্মে বিশ্বাসী। এই ধারাবাহিকতাই আদিকাল থেকে চলে আসছে, বর্তমানেও চলছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। আর যুগে যুগে ধর্মই নিয়ন্ত্রণ করছে মানুষের সভ্যতা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং জীবনধারা। ধর্মীয় রীতিনীতির ওপর ভিত্তি করেই গঠিত হয়েছে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং দেশ। একজন মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সবকিছুই ধর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কেউ যদি না মানেন সেটা হচ্ছে তার ধর্ম থেকে বিচ্যুতি। তাই একজন ব্যক্তি সেক্যুলার হলেও তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ধর্মীয় রীতিতেই সম্পন্ন হয়। সমাজের যা কিছু সত্য, সুন্দর এবং মহৎ, তার সবকিছুর উৎসই ধর্ম। আর ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের রীতিনীতি ভিন্ন ভিন্ন হলেও সবাই বিশ্বাস করেন এই সৃষ্টিজগতের একজন স্রষ্টা আছেন। তিনিই সবকিছুর সৃষ্টিকারী, লালনকারী এবং পালনকারী। সবাই বিশ্বাস করেন যে, মৃত্যুর পরে তার কৃতকর্মের জন্য স্রষ্টার কাছে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এবং কৃতকর্মের ফল লাভ করবে। প্রত্যেক ধর্মেরই এক বা একাধিক প্রধান ব্যক্তি রয়েছেন যিনি বা যাঁরা এই ধর্মকে ধারণ করেছেন, অনুসরণ করেছেন এবং প্রচার করেছেন। এসব ব্যক্তিরা নিজ নিজ ধর্মের অনুসারীদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত এবং মান্যজন। তাই এসব ব্যক্তিদের অপমান তাদের অনুসারীদের কেউই সহ্য করতে পারে না।
হজরত ঈসা (আ.)-এর অপমান যেমন কোনো খ্রিস্টান সহ্য করতে পারেন না, গৌতম বুদ্ধের অপমান যেমন কোনো বৌদ্ধ সহ্য করতে পারে না, শ্রীকৃষ্ণের অপমান যেমন কোনো হিন্দু সহ্য করতে পারেন না, ঠিক তেমনি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অপমানও কোনো মুসলমান সহ্য করতে পারেন না। সুতরাং প্রত্যেক মানুষের উচিত তার নিজ ধর্ম এবং নিজ ধর্মের সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান করার পাশাপাশি অপরের ধর্ম এবং অপরের ধর্মের সম্মানিত ব্যক্তিদেরও সম্মান করা। আর সেটা না করলেও কখনোই এবং কিছুতেই অসম্মান করা যাবে না। কারণ এতে সমাজের শান্তি, সম্প্রীতি এবং ভালোবাসা নষ্ট হয়। সৃষ্টি হয় অশান্তি, অরাজকতা এবং হিংস্রতা ও বর্বরতা। যার আগুনে পুড়ে সর্বনাশ হয় সমাজ, ধ্বংস হয় সভ্যতা। সুতরাং এই ধ্রুব সত্যটুকু জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবারই অনুসরণ করা উচিত এবং করতে হবে। বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় দেড়শ’ কোটি মুসলমানের বাস। সুতরাং ইসলাম এবং মুসলমানরা বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি এবং তারা বর্তমান বিশ্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অথচ কিছু ব্যক্তি মুসলমানদের বিশ্বাস, রীতিনীতি এবং এর প্রধান ব্যক্তি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবজ্ঞা এবং হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আজ মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশে কিছু তরুণ কর্তৃক মহান স্রষ্টা আল্লাহ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং পবিত্র কোরআন হাদিসকে অবজ্ঞা ও অপমান করে ব্লগে লেখালেখি তার একটি উদাহরণ। আর ইসলামকে অবমাননার ঘটনা নতুন নয় এবং তা ব্লগেই কেবল সীমাবদ্ধ নয়।
২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত ‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’ নামক একটি চলচ্চিত্রে নাকুলা বাসিলে অত্যন্ত কৌশলে মানবতার মুক্তির দূত, সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অপমানিত করেছেন। এই চলচ্চিত্রকার সিনেমার মাধ্যমে কৌশলে ইসলামের প্রবক্তা এবং মুসলিম জাতির নবীকে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। পশ্চিমাবিশ্ব এটাকে বাক-স্বাধীনতার কথা বলে নাকুলা বাসিলেকে সমর্থন করে। এ ঘটনার কিছুদিন পর ফ্রান্সের একটি ম্যাগাজিন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করে কার্টুন প্রকাশ করে। দুই যুগ আগে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা করে সালমান রুশদী লিখেছিল স্যাটানিক ভার্সেস নামক উপন্যাস। তখনো পশ্চিমাবিশ্ব মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে সালমান রুশদীর পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং বইটির পক্ষে কথা বলেছিল। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ সরকার সালমান রুশদীকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেছিল। এভাবে মুসলমানদেরকে আঘাত করার জন্য এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবজ্ঞা করার জন্য কিছু ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে, যা ধারাবাহিকভাবেই ঘটে চলেছে। কিন্তু শান্তি ও মানবতার স্বার্থেই এসব কাজ বন্ধ করতে হবে। যেসব ব্যক্তি আজ মহান আল্লাহ, ইসলাম এবং নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে হেয় প্রতিপন্ন করছে আর যারা আজ আল্লাহ, ইসলাম ধর্ম এবং তার নবীকে অপমান করাটাকে মুক্তচিন্তা এবং বাক-স্বাধীনতা বলে সমর্থন করছে, তাদের জানা উচিত এই বাক-স্বাধীনতা তাদের কারো জন্য কোনো ধরনের কল্যাণ বয়ে আনবে না। বরং এটা কেবল তাদের জন্য ক্ষতিই নিয়ে আসবে। কোনো ব্যক্তি যদি মহান আল্লাহকে অস্বীকার করে বা কটাক্ষ করে, তাহলে তাতে মহান আল্লাহর মান-সম্মান এবং ক্ষমতা কিছুই কমবে না। বরং মহান আল্লাহ হচ্ছেন মহাবিশ্বের সবকিছুরই সৃষ্টিকর্তা, লালনকর্তা এবং পালনকর্তা। তিনি একক, অদ্বিতীয় এবং চিরঞ্জীব। তিনি সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন বরং সবাই তার মুখাপেক্ষী। একইভাবে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করার কারণে তাঁর মান-সম্মান যেমন কমবে না ঠিক তেমনি ইসলামকে কটাক্ষ করায় ইসলামেরও কোনো ক্ষতি হবে না। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হচ্ছেন স্বমহিমায় উদ্ভাসিত একজন ব্যক্তি যাঁর খ্যাতি, সুনাম এবং প্রভাব শত শত বছর ধরে পৃথিবীকে যেমন আলোড়িত, আলোচিত এবং প্রভাবিত করছে, ঠিক তেমনি কেয়ামত পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা অধ্যাপক এবং বুদ্ধিজীবী মাইকেল এইচ হার্ট বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করে পৃথিবীর শুরু থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ একশ’ জন মানুষ নিয়ে লিখেছেন আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘দি হান্ড্রেড’ নামক বই। যেখানে তিনি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এক নম্বর পজিশনে স্থান দিয়েছেন। অথচ মাইকেল এইচ হার্ট একজন খ্রিস্টান। আর অপরকে অসম্মান করে নিজেকে কখনো যেমন সম্মানিত করা যায় না, ঠিক তেমনি অপরকে ছোট করে নিজেকে কখনো বড় করা যায় না।
সবারই মনে রাখা উচিত যে, ইসলাম হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবন দর্শন এবং একমাত্র সত্য ধর্ম। এটা তার আপন মহিমায় মহিমান্বিত। সুতরাং ইসলামকে অবমাননা করলে ইসলামের কোনো ক্ষতি হয় না। অপরদিকে আল্লাহ, ইসলাম এবং মহানবীকে কটাক্ষ করে এসব ব্যক্তিরা মুসলমানদের নয় বরং নিজেদেরই ক্ষতি করছে। সুতরাং আল্লাহ, ইসলাম এবং মহানবীকে হেয় প্রতিপন্ন করার ঘটনা নাস্তিক, ব্লগার এবং তাদের সহযোগী ধর্মনিরপেক্ষ এবং ধর্মহীনদের জন্য বুমেরাং হবে। আর অমুসলিমরা মুসলমানদের স্রষ্টা ধর্ম ইসলাম এবং নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অপমান এবং অবজ্ঞা করলেও, মুসলমানরা কখনো অন্য ধর্ম এবং তাদের প্রধান ব্যক্তিদেরকে কটাক্ষ করবে না। কারণ আল্লাহ মুসলমানদেরকে ইসলামকে অনুসরণ এবং মহানবীকে সম্মান করার পাশাপাশি অমুসলিমদের ধর্ম এবং তাদের দেবতা এমনকি সম্মানিত ব্যক্তিদেরকেও সম্মান করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন ‘আল্লাহকে ছেড়ে তারা যাকে ডাকে, তাদেরকে তোমরা গালি দিও না, কেননা তারা সীমালঙ্ঘন করে অজ্ঞানবশত আল্লাহকেও গালি দিবে” (সূরা আনয়াম, আয়াত-১০৮)। সুতরাং অমুসলিমরা, তাদের ধর্ম, তাদের দেবতা এবং তাদের ধর্মের সম্মানিত ব্যক্তি সবই মুসলমানদের কাছে নিরাপদ।
এদিকে ইসলাম এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননার কারণে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হলেও, তাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে এবং কখনো সহিংস হওয়া যাবে না। মুসলমানদেরকে হতে হবে ধৈর্যশীল, সহনশীল এবং ক্ষমাশীল। আবেগের বশবর্তী হয়ে কখনো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। আমরা এর জন্য শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করব কিন্তু কখনো আইনকে নিজের হাতে তুলে নেব না। মুসলমানদের উদ্দেশে বলছি, মন্দের প্রতিবাদ কখনো মন্দ দিয়ে হয় না। ভালো কাজ দিয়েই আমরা মন্দ কাজের প্রতিবাদ করব। আর ইসলাম আমাদেরকে সেটাই শিক্ষা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন ‘মন্দের মোকাবেলা কর যা উত্তম তা দ্বারা’ (সূরা মুমিনুন, আয়াত-৯৬)। সুতরাং যে কোনো মূল্যে আমাদেরকে ধৈর্যশীল হতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, ধর্ম এবং ধর্মের সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে অবমাননা করে একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের পাতানো এ ফাঁদে পা দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবে না। আর ইসলাম কখনো সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে না এবং তা সমর্থনও করে না। ইসলাম হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সার্বজনীন মানবাধিকারের গ্যারান্টি। পরিশেষে ধর্মবিদ্বেষী ব্যক্তিদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, অনুগ্রহ করে মুক্তচিন্তা ও বাক-স্বাধীনতার নামে কারো ধর্মবিশ্বাসকে অবজ্ঞা করবেন না। একইভাবে আল্লাহ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং ইসলামকেও অবমাননা করবেন না। আপনার ইচ্ছা হলে আপনি নাস্তিক হোন এবং ধর্ম ও স্রষ্টাকে অস্বীকার করুন; কিন্তু অপরের ধর্মবিশ্বাসকে অপমান করবেন না। কারণ এই অধিকার আপনার নেই এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের আইনে এই অধিকার কাউকে দেয়া হয়নি। আর আপনাদের তুচ্ছ-তচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য এবং লেখায় ইসলামের কোনো ক্ষতি হবে না এবং আপনাদেরও কোনো উপকার হবে না। বরং এতে ইসলাম আরো বিকশিত এবং গতিশীল হবে, আর নাস্তিকরা ধ্বংস হবে। এটা দিবালোকের মতোই সত্য এবং অনিবার্য। আর এটাও সত্য যে, মুক্তচিন্তা মানে স্রষ্টাকে অস্বীকার করা এবং ধর্মের প্রভাব ও বিশ্বাস থেকে মুক্ত হওয়া নয়। একইভাবে বাক-স্বাধীনতা মানে যা খুশি তা করা নয়। যে কাজ দ্বারা অন্যের স্বাভাবিক কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই কাজ করার অধিকারটা ব্যক্তি স্বাধীনতা নয়। এখনো সময় আছে অতীত ভুল এবং অন্যায় কর্মকান্ডের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান এবং তওবা করে স্রষ্টার দিকে ফিরে আসুন। তা না হলে আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যুর পরে অনন্ত কালের জন্য অনিবার্য ভয়ানক শাস্তি, যেখান থেকে কেউই আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না। কারণ আল্লাহ যে কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহকে না মানার অধিকার দিলেও, পরকালীন কঠিন শাস্তি থেকে কাউকেই রেহাই দেননি। আর আল্লাহর দেয়া শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার ক্ষমতা কারোই নেই।
লেখক : প্রকৌশলী ও কলামিস্ট