বাংলাদেশের ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ এখন তুরস্কে
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পথিকৃত মনে করা হয় বাংলাদেশকে। এ ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ এক সময় বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ ব্যবস্থার জন্য কৃতিত্ব দাবি করলেও এই দলটিই আবার ব্যবস্থাটি বাতিল করে দিয়েছে, যার জের ধরে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
আওয়াম লীগ সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দিলেও নেপাল, পাকিস্তানসহ বহু দেশই এখন এ ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছে। সর্বশেষ এই তালিকায় যোগ হচ্ছে তুরস্কের নাম। তুরস্কের নির্বাচন পদ্ধতি খুবই স্বচ্ছ। আমেরিকার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠলেও তুরস্কের সাম্প্রতিক কোনো নির্বাচন নিয়ে আদৌ কোনো প্রশ্ন ওঠেনি।
তা সত্ত্বেও আসন্ন সংসদ নির্বাচন তদারকিতে দেশটিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল সব দলকে নিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাবুতোগলু। তুরস্কে গত জুনের মাসের সংসদ নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এবং কোয়ালিশন সরকার গঠনের আলোচবা ফলপ্রসু না হওয়ায় আগামী ১ নভেম্বর আবার দেশটিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান দাবুতোগলু বলেন, আগামী নির্বাচন তদারকির জন্য তিনি বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি এবং ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করতে চাচ্ছেন।
দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২৩ আগস্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই তিনি এ ব্যাপারে বিরোধী দলগুলোর সিদ্ধান্ত জানতে চান। ‘বিরোধী নেতারা যখন যেখানে বসতে চান আমি এই এজেন্ডায় সেখানেই বসতে প্রস্তুত’ বলছিলেন দাবুতোগলু।
তুরস্কে ৭ জুনের নির্বাচনের পর সরকার গঠনের জন্য ৪৫ দিন সময় ছিল সংবিধানে। রবিবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। কিন্তু কোয়ালিশন সরকার গঠনের আলোচনা ভেঙে গেছে। তবে তুরস্কের বিরোধী দুটি দলের নেতারা বলছেন, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রিসভার জন্য দলীয় কোনো নেতার নাম সুপারিশ করবেন না।
তুরস্কে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে দাবুতোগলু বলেন, তুরস্কের গণতন্ত্রকে রক্ষা করা হবে। প্রধান দুটি বিরোধী দল মন্ত্রিসভায় যোগ না দিলে তুরস্কের কুর্দিপন্থী দল পিপল’স ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা গঠন ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না বলেও মত দেন দাবুতোগলু।
তুরস্কের সংবিধান অনুসারে সংসদে আসনের ওপর ভিত্তি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ক্ষমতাসীন একে পার্টি পাবে ১২জন মন্ত্রী। আর প্রধান বিরোধী দল পাবে সাতটি পদ। অন্য দুটো দল পাবে তিনজন করে মন্ত্রী।