যুদ্ধের ভয়াবহতার সাক্ষি সিরীয় শিশুর নির্মম ছবিটি
তুরস্কের সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা ছোট্ট এক সিরীয় শিশুর প্রাণহীন দেহের ছবি পশ্চিমা দেশগুলোতে ঝড় তুলেছে। শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে ইউরোপীয় দেশগুলোর অনীহা ও গড়িমসির সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, এরপরও কী ইউরোপের হৃদয় গলবে না?
ছবিতে দেখা যায়, তুরস্কের প্রধান পর্যটন রিসোর্টে শিশুটি উপুড় হয়ে পড়ে আছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, প্রাণহীন এই ছেলেটির স্থির ও ভিডিওচিত্র খুব দ্রুতই প্রথমে তুরস্কের সামাজিক মাধ্যমে, এরপর তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ দর্শক, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক সবাই-ই পীড়াদায়ক ছবিটি অন্য সবাইকে দেখাতে চান, যাতে এটা সিরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন তৈরি করতে পারে।
একদিকে মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গিবাদের ধোয়া তুলে আর গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে তাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া এবং ঐসব দেশ থেকে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় না দেয়ায় কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো।
লাল টি শার্ট এবং নীল শর্ট পরা ৩ বছর বয়সী শিশুটির নাম আয়লান কুর্দি। সিরিয়ার কোবানি শহর থেকে এসেছে সে। অন্য হাজারো লোকের মত সেও ইউরোপে পাড়ি দিতে চেয়েছিল।
ধারণা করা হচ্ছে এই শিশুটি সেই ১২ সিরীয়র একজন যারা গ্রিসে পৌঁছার চেষ্টাকালে নৌকাডুবিতে মারা যায়।
তার বড় ভাই ৫ বছর বয়সী গালিপের মহদেহও পাওয়া গেছে সৈকতের আরেকটি অংশে।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী সংবাদপত্র ইন্ডিপেনডেন্ট মন্তব্য করেছে ‘সৈকতে ভেসে আসা মৃত সিরীয় শিশুর এই অসাধারণ শক্তিশালী ছবিও যদি শরণার্থীদের সম্পর্কে ইউরোপের মনোভাবে পরিবর্তন আনতে না পারে তবে আর কীসে পারবে?’
ইউরোপজুড়ে একই প্রশ্ন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
তুরস্কের কোস্টগার্ড জানায়, বুধবার গ্রিসের এজিয়ান দ্বীপ থেকে পৃথক সময়ে যাত্রা শুরুর পর দুটি নৌকা ডুবে গেছে।
এতে নিহতদের মধ্যে ৫টি শিশু ও একজন নারী রয়েছেন। ১৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শিশু আয়লানের ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে। এসেছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
অনেকেই শরণার্থী সম্পর্কে তাদের সরকারের আশু পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আগ্রাসন, গৃহযুদ্ধ ও সহিংসতা প্রেক্ষাপটে বহু লোক এখন ইউরোপে পাড়ি জমাতে চেষ্টা করছে।
ইউরোপের দেশগুলো তাদের আশ্রয় দেবে কিনা কিংবা কতজনকে নেবে তা নিয়ে ২৮ সদস্যের জোটে তীব্র বিতর্ক চলছে।