বাংলাদেশের জনগনের মাথাপিছু ঋণ ১৩ হাজার ১৬০ টাকা
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জনগনের বর্তমানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১৬৯ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার ১৬০ টাকা। সংসদে প্রশ্নোত্তরে আজ তিনি এ তথ্য জানান।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের নূরজাহান বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ৩০ জুন তারিখে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের (পাবলিক সেক্টর) স্থিতির পরিমাণ (সাময়িক) ২৫ হাজার ৯০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় দুই লাখ সাত হাজার ২৬৫ কোটি টাকা।
বিকালে স্পিকার ড. শিরীণ শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তরর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অর্থমন্ত্রীর পক্ষে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম মান্নান প্রশ্নের জবাব দেন।
মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঋণ পাবে এমন ১১টি উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা/দেশ অনুযায়ী ঋণের স্থিতির পরিমাণ ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত নিন্মরূপ- এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ৬১ হাজার ৮৫০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, চীন ৭ হাজার ৩৬৫ কোটি ৮ লাখ টাকা, আইডিএ (বিশ্বব্যাংক) ১ লাখ ২ হাজার ২৪৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আইডিবি ৩ হাজার ৩৫৮ কোটি ২১ লাখ টাকা, ডেনমার্ক ১০৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, জাপান ১৯ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা, ভারত ১ হাজার ৬৫৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, দক্ষিণ কোরিয়া ২ হাজার ৭৯১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, কুয়েত ১ হাজার ৭৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, ইফাদ ২ হাজার ৯৩৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ও অন্যান্য ৩ হাজার ৬৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ ১ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা
এম আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ১৮২.৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ১হাজার ৪১৯ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
দেশে ঋণ খেলাপীর সংখ্যা পৌণে দুই লাখ
বেগম ওয়াসিকা আয়শা খানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ঋণ খেলাপীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮১ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইরফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি ডাটাবেজে রক্ষিত জুন, ২০১৫ মাস ভিত্তিক ৫০ হাজার টাকা ও তদুর্ধ বকেয়া স্থিতিসম্পন্ন ঋণ হিসাব এবং ১০ হাজার টাকা ও তদুর্ধ বকেয়া স্থিতিশীল খেলাপী ক্রেডিট কার্ড হিসেবের ভিতিত্তেই এই ঋণ খেলাপীর সংখ্যা।
ঋণের সুদ হার কমাতে ব্যাংক সমুহের ওপর চাপ অব্যাহত আছে।
একে এম রহমতুল্লাহর (ঢাকা-১১) এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণের সুদহার হ্রাসকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালনের জন্য তফসিলি ব্যাংক সমুহের ওপর নৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। ফলে আমানতের ওপর সুদহার হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ঋণ ও অগ্রিমের ওপর সুদহার ক্রমান্বয়ে আরো হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
মন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির সাধারণ নিয়মে মূল্যস্তর তথা মূলস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদহার বাড়ানো হয়, তবে সাপ্লাই সাইড বাড়ানোর দৃষ্টিকোণ থেকে এটা আংশিকভাবে সত্য যে, ব্যাংক ঋণের সুদ সিংগেল ডিজিটে না আনলে দ্রব্যমুল্য কমার সম্ভাবনা কম থাকে। এমনকি দেশের শিল্পায়নের আশানুরূপভাবে বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।