মারা গেলেন সেই শিশুর মা-ও
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে গত ৩১ জুলাই উগ্রপন্থী ইহুদিদের অগি্নসংযোগে শিশু নিহতের ঘটনার পর তার মাও মারা গেছেন। ইসরাইলি একটি হাসপাতালে গত রোববার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এক মাসের বেশি সময় যন্ত্রণা ভোগার পর মারা যান রিহাম দাওয়াবশা (২৬)। তার শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছিল। এর আগে তার স্বামী এবং সন্তান উগ্র ইহুদিদের দেয়া আগুনে পুড়ে মারা যান।
ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবের তেল হাশোমার হাসপাতালের একজন মুখপাত্র সোমবার জানান, গত রোববার রাতে রিহাম দাওয়াবশা মারা যান। মৃতের পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন, সোমবার তার লাশ দাফন করা হবে। ধারণা করা হচ্ছিল, সোমবার ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ রিহামের লাশ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে।
এদিকে, রিহাম দাওয়াবশার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। সোমবার এক বিবৃতিতে তারা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর সব অত্যাচার প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিশোধ নিতে ফিলিস্তিনিদেরও আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, সোমবার জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয়কারী জাতিসংঘ কার্যালয়ের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে প্রায় ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি বাড়িঘর বর্তমানে ইসরাইলি উচ্ছেদ আদেশের আওতায় রয়েছে। এর ফলে অব্যাহত অনিশ্চয়তা ও হুমকির মুখে থাকা ওই এলাকার বাসিন্দাদেরকে বসতবাড়ি ছাড়তে হচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, উচ্ছেদ আদেশ যেখানে বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেখানেই লোকজন বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। পরিণামে তারা দারিদ্র্যের জালে বন্দি হচ্ছে এবং সাহায্যের ওপর তাদের নির্ভরতা বাড়ছে। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ১৯৮৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনি মালিকানাধীন ১৪ হাজারের বেশি অবকাঠামো উচ্ছেদের নির্দেশ জারি করেছে ইসরাইল। গত মাসে অক্সফাম এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো ৩১টি আন্তর্জাতিক সংগঠন ইসরাইলি এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে পশ্চিম তীরে উচ্ছেদ অভিযানকে ‘ব্যাপক’ বলে বর্ণনা করেছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, কেবল আগস্ট মাসের এক সপ্তাহেই ইসরাইল ৬৩টি ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ধ্বংস করেছে। এই রিপোর্ট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হয়নি ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। যদিও এর আগে তারা বলেছিল, ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় অনুমোদন না থাকায় তারা এসব অবকাঠামো ভেঙে ফেলেছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা বলছে, তাদের ভবন নির্মাণ অনুমতির আবেদন ইসরাইল নিয়মিতভাবেই প্রত্যাখ্যান করছে।