সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করছে ইইউ দেশগুলো
ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়া শরণার্থীদের একনাগারে কয়েকদিন গ্রহণের পর সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করতে শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো। শরণার্থী গ্রহণে জার্মান চ্যান্সেলরের ঘোষণার পর দেশটির উদ্দেশে আসা শরণার্থীদের ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইইউর দেশগুলো।
রোববার অস্ট্রিয়া সীমান্তে চেকপয়েন্ট চালু করে জার্মানি। ইইউর দেশগুলো নিজেদের মধ্যকার সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নেওয়ার কয়েক দশক পর প্রথমবারের মতো এ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়।
এদিকে সোমবারও অস্ট্রিয়া-জার্মানি সীমান্তে শরণার্থীতের ঢল অব্যাহত ছিল। এদিন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের মুখপাত্র জানান, জার্মানি শরণার্থীদের জন্য তাদের দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে না। তবে আশ্রয় প্রদান প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এদিকে সোমবার অস্ট্রিয়া বলেছে, শরণার্থীদের আগমন ঠেকাতে হাঙ্গেরি সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ এবং প্রয়োজনে সেনা মোতায়েন করবে তারা। অস্ট্রিয়ার সীমান্তে জার্মানির কড়াকড়ি আরোপের পর এ পদক্ষেপ নেয় দেশটি।
পোল্যান্ড জানিয়েছে, হাঙ্গেরির সঙ্গে নিজেদের সীমান্তের কোনো সমস্যা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ নেবে তারা। এছাড়া হাঙ্গেরি ও অষ্ট্রিয়ার সঙ্গে স্লোভাকিয়ার সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে দেশটি।
অস্ট্রিয়ার পুলিশ জানিয়েছে গত রোববার দেশটিতে ১৪ হাজার এবং সোমবার সাত হাজার শরণার্থী প্রবেশ করেছেন। হাঙ্গেরি জানিয়েছে, রোববার দেশটিতে আসা পাঁচ হাজার ৮০৯ জন শরণার্থী আটক রয়েছেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার শরণার্থী সমস্যা বিষয়ে এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। সিরিয়া ও ইরিথ্রিয়া থেকে আসা প্রায় ৪০ হাজার শরণার্থীকে বাধ্যতামূলক কোটায় বণ্টন করতে একটি পরিকল্পনায় ভোটগ্রহণ হবে এতে।
এছাড়া বৈঠকে শরণার্থীতের ফেরত পাঠানোর জন্য নিরাপদ এমন কয়েকটি দেশের তালিকা করা হতে।
এর আগে ইইউর ২৩টি দেশে এক লাখ ৬০ হাজার শরণার্থীকে ভাগ করে নেওয়ার এক পরিকল্পনার কথা বলা হলেও মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো এর বিরোধীতা করে আসছিল।
গৃহযুদ্ধ ও দারিদ্র্যের কারণে সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, ইরিথ্রিয়া ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশ থেকে ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল নেমেছে এক মাসের বেশি সময় ধরে। জার্মানির উদ্দেশে যাওয়া এসব শরণার্থীর বেশিরভাগই গ্রিস কিংবা হাঙ্গেরির মতো দেশে নাম নিবন্ধনে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়া এসব শরণার্থী মনে করছেন গ্রিস বা ইউরোপের অন্য কোনো দেশে নিবন্ধন করলে তাদেরকে সেই দেশেই থাকতে হবে, ফলে তাদের আর জার্মানি যাওয়া হবে না।