ফোবানার চূড়ান্ত শো’র জন্য প্রস্তুত আটলান্টা
উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় আয়োজন ফোবানার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৩০শে আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দিন ব্যাপী ফোবানা-২০১৩ সম্মেলন হবে জর্জিয়ার আটলান্টা শহরের কব গ্যালেরিয়ায়।
গোটা অঞ্চল এবং দেশ থেকে আমন্ত্রিত বিশিষ্টজনদের স্বাগত জানাতে এখন প্রস্তুত আটলান্টা। সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর্দা উঠবে ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায়। প্রবাসী বাংলাদেশীদের মহা মিলন মেলায় পরিণত হবে এই আয়োজন। কথাগুলো জানিয়েছেন ফোবানার মুখপাত্র আজাদুল হক ও এটর্নি আলমগীর।
আজাদুল হক জানান, প্রস্তুতি শেষ এখন চলছে শুধু লিস্ট ধরে বার বার দেখে নেওয়া কোথাও কোন কিছু বাদ পড়েছে কি না। অতিথিদের থাকার জন্য আটলান্টার হোটেল শেরাটন, মারিয়টে বুকিং দেওয়া হয়েছে। আজাদুল হক বলেন, এবারের আয়োজনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। অতিথিদের জন্য দুটি হোটেলে রুম বুকিং দেওয়ার পরে এখন আশেপাশের হোটেলে খোঁজ চলছে।
অ্যাটর্নি আলমগীর বলেন, ঐক্যের এই ফোবানায় মানুষের ঢল নামবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা। এখন একটাই চিন্তা, সবাইকে বসতে জায়গা দেওয়া যাবে তো?
শুক্রবার সন্ধ্যা সাত টায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে দেশ থেকে আসছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।
আয়োজকরা বলেন, ফোবানা একটি অলাভজনক এবং অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এখানে ডাঃ দীপু মনি এতে আসছেন একটি স্বাধীন দেশের সম্মানিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে, কোন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে নয়।
তারা বলেন, ফোবানাকে কোনো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যাবে না। এতে সব ধর্ম, সব রাজনৈতিক মতাবলম্বীর মানুষ হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন একসাথে।
নানা রাজনৈতিক মতের মানুষ তাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনাকে দূরে রেখে শুধু ফোবানার ভালোর জন্য দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তারা।
অনুষ্ঠানের আয়োজন সম্পর্কে আজাদুল হক বলেন, ব্যতিক্রমধর্মী একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে যেন অনেকটা হঠাৎ করেই! কোন লম্বা ভাষণ নেই, নেই কোন গতানুগতিক উপস্থাপনা। অন্যতম প্রধান আকর্ষণ থাকবে শিশুদের নিয়ে রচিত একটি মনোরম গানের অনুষ্ঠান “প্রজাপতির গুঞ্জন” যা প্রযোজনা করেছেন “দোলন চাঁপা” এবং নির্দেশনা দিয়েছেন পল্লী কবির। টানটান গাঁথুনিতে গড়া বাকী পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা এবং সার্বিক তত্তাবধানে থাকবেন গোলাম মহিউদ্দিন।
শনিবার এবং রবিবার জমজমাট অনুষ্ঠান থাকছে প্রধান মঞ্চে। মঞ্চে বিভিন্ন সময়ে থাকবে নগর বাঊল জেমস, আরফিন রুমী, মোনালিসা, হায়দার হুসেইন, পার্থ বড়ুয়া, লিজা, নাশিদ কামাল, কনা, সিলভিয়া আফরিন ফারিয়া, বাপ্পা মজুমদার, ফাহমিদা নবী এবং নূপুর শিল্পী গোষ্ঠী। নাচ, গান, ফ্যাশন শো ছাড়াও থাকছে বিভিন্ন স্টেট থেকে যাওয়া অসংখ্য শিল্পীদের উপভোগ্য পরিবেশনা।
তারা আরও জানান, শনিবার সকাল ৯টায় হোটেল শেরাটনে সম্মান জানানো হবে ফোবানার সব এলামনাইকে। ফোবানার ইতিহাসে এই প্রথমবার তাদের উপহার দেয়া হবে ভেলভেটের বাক্সে গোল্ড প্লেটেড ফোবানা এলামনাই পিন। ফোবানার শুরু (১৯৮৭ সাল) থেকে যারা ফোবানার সাথে জড়িত ছিলেন দলমত নির্বিশেষে তারা সবাই পাবেন এই পিন। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ফোবানার অনেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
এছাড়া শনিবার ও রোববার সকাল এগারটা থেকে শুরু হবে ইউথ ফোরামের কার্যক্রম। সেখানে থাকবেন মিস মিসিসিপি পারমিতা মিত্র ছাড়া আরো অনেকে। এরপর দুপুর ১টা থেকে চলবে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার।
আজাদুল বলেন, এবারের সেমিনারে এতই বেশী লেখা জমা পড়েছে যে সমিনার কমিটি বাধ্য হয়েছেন দুটো রুমে সেমিনারের আয়োজন করতে। সেমিনার-এর পরপরই শুরু হবে জমজমাট কাব্য জলসা। পাশেই চলবে চিত্র প্রদর্শনী। প্রধান মঞ্চের অনুষ্ঠান, কাব্য জলসা, পুথিপাঠের মধ্য থেকেই দর্শককে বেছে নিতে হবে তারা কোনটা দেখবেন।
বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মোবাইল ইউনিট বসবে সম্মেলন কেন্দ্রে। এছাড়া থাকবে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের বুথ। ফোবানার অতিথিদের জন্য সেখানে থাকবে এফসি অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ। শুধুমাত্র পাসপোর্টের ফটোকপি এবং দুটো ছবি হলেই যে কোন প্রবাসী এফসি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন বলেই জানান আয়োজকরা। কোনো ডিপোজিট ছাড়াই এই অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে এবং তা ডিপোজিট ছাড়াই সচল থাকবে।
আয়োজকরা জানান, পাসপোর্ট ছবি তোলা এবং ফটোকপি করার ব্যবস্থা থাকবে একটু দূরে থাকবে মীর টেলিকমের বুথ যেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন ২ ডলারের ফ্রী ফোন কার্ড!! এছাড়া মুখরোচক, লোভনীয় খাবারের দোকানতো আছেই। এই দোকানগুলো খোলা থাকবে বহু রাত পর্যন্ত। বিস্তারিত জানার জন্য www.fobanaonline.com অথবা www.fobana2013.fobanaonline.com ব্রাউজ করুন।