ইয়াসমীনের ক্ষতিপূরণ মামলা নিউইয়র্ক পুলিশের বিরুদ্ধে
এনা, নিউইয়র্ক: অল্প বয়সে হতাশা থেকে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ইয়াসমীন রহমান। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। কিন্তু জীবনের সেই ভুলটাই এখনও চরমভাবে ভোগাচ্ছে তাকে। আর এজন্য নিউইয়র্ক পুলিশ ও সিটি প্রশাসনকে দায়ী মনে করছেন। গত মাসে এ অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন তিনি।
জানা যায়, ২০০১ সালে ১৫ বছর বয়সে ট্রেনের নিচে পড়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ইয়াসমীন (২৭)। ম্যানহাটানে লেক্সিংটন অ্যাভিনিউতে ট্রেনের সামনে লাফিয়ে পড়েছিলেন তিনি। তখন তার মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লাগে। হাড় ভেঙে যায়। স্মৃতিশক্তি প্রায় লোপ পেতে বসেছিল। চিকিত্সকদের তত্ত্বাবধানে ৬ মাস হাসপাতালে কাটানোর পর মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন ইয়াসমীন। এরপর সম্পূর্ণ নতুন একজন মানুষ হিসেবে বাঁচার পথ খোঁজেন। হাই স্কুল শেষ করে ভর্তি হন ম্যানহাটান বরো কমিউনিটি কলেজে। মনোবিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা নেন প্যাচ ইউনিভার্সিটি থেকে। স্বপ্ন ছিল তিনি মানসিক যন্ত্রণায় কাতর মানুষদের উপদেশ দেবেন। অথবা পারিবারিক দাঙ্গা-হাঙ্গামায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু ইয়াসমীনের পক্ষে তা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেলেও তা বেশিদিন টেকে না। চাকরির জন্য আবেদনের পর তার আগের কর্মকাণ্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়ার সময়েই কৈশোরের সেই আত্মহত্যার কাহিনী ধরা পড়ে যায়। তাই চাকরি হয় না। এভাবে অন্তত ৩৯টি চাকরি হাতছাড়া হয়েছে তার! এসবের জন্য তিনি এবার নিউইয়র্ক পুলিশ ও সিটি প্রশাসনকে অভিযুক্ত করলেন। ইয়াসমীন রহমানের দৃঢ়বিশ্বাস, আত্মহত্যার সময় পুলিশ যেসব ছবি উঠিয়েছিল তা প্রকাশ করা হয় বিভিন্ন মিডিয়ায়।
উচ্চশিক্ষিত হয়েও এক পর্যায়ে তিনি গ্রোসারি স্টোর অথবা সুপার মার্কেটে কাজ নেন। কিন্তু যখনই তারা তার আত্মহত্যার চেষ্টার তথ্য জানতে পারেন, তখনই তাকে বরখাস্ত করা হয়। গত জুলাই মাসে মামলাটি হয়েছে কুইন্স সুপ্রিমকোর্টে। ইয়াসমীন রহমান বাস করেন এলমহার্স্টে।