ফোর-জি প্রযুক্তিতে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ
তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন প্রযুক্তির (থ্রি-জি) মধ্য দিয়ে চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি (ফোর-জি) এবং লং টার্ম ইভ্যুলেশন (এলটিই) প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। থ্রিজি লাইসেন্স নিয়ে অপারেটররা ফোর-জি এবং লং টার্ম ইভ্যুলেশন (এলটিই) প্রযুক্তির সেবাও দিতে পারবে। আর এসব সেবা দেয়ার জন্য অপারেটরদের নতুন করে কোন লাইসেন্স নিতে হবে না বলে জানিয়েছন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস। গতকাল (রবিবার) টেলিকম রিপোর্টারদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশ (টিআরএনবি) সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা জানান।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে অপারেটররা দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স নিয়ে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে। এখন নতুন করে থ্রিজি লাইসেন্স নিতে যাচ্ছে তারা। তবে আগামীতে ফোরজি বা এলটিই’র জন্য তাদের আর লাইসেন্স নিতে হবে না। থ্রিজি লাইসেন্স প্রাপ্ত অপারেটররা ২১০০ ব্যান্ডের স্পেকট্রাম দিয়ে ফোরজি ও এলটিই সেবা দিতে পারবে। তিনি বলেন, ‘অপারেটরদের টেকনোলোজি নিউট্রিলিটি দেয়া হবে। এতে তারা সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে ৮০০, ৯০০ ও ১৮০০ ব্যান্ডের স্পেকট্রামও থ্রিজিতে ব্যবহার করতে পারবে। তবে এ বিষয়ে কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হবে।’
এদিকে সোমবার থ্রিজি লাইসেন্সের জন্য বিড আর্নেস্ট মানি জমা দেয়া কথা থাকলেও অপারেটররা টাকা জমা দিচ্ছে না। অপারেটরদের অমীমাংসিত কিছু ইস্যুর বিষয়ে গতকালও বিটিআরসিতে বৈঠক করেছে দেশের মোবাইলফোন অপারেটরদের সিইও এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, এরই মধ্যে অপারেটরদের ঝুলে থাকা অনেকগুলো বিষয়েরই সমাধান হয়েছে। তারা সিম কার্ড রিপ্লেসমেন্টের ইস্যুতে কথা বলতে এসেছিল। বিড আর্নেস্ট মানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অপারেটরদের অনুরোধে আরো কয়েক দিন সময় বাড়ানো হতে পারে। তবে থ্রিজি’র নিলাম যথা সময়েই হবে। এক্ষেত্রে সময় বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের (তরঙ্গ) নিলাম ফ্লোর প্রাইস ২ কোটি মার্কিন ডলারের উপর হবে, তবে কতটুকু উপরে ওঠবে তা এখনই বুঝা যাচ্ছে না। তবে সেটা অস্বাভাবিক রকমের বেশি আশা করা হচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দর অস্বাভাবিক হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। গ্রাহকরা সুলভে উন্নত প্রযুক্তির সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি অপারেটরকে থ্রিজি প্রযুক্তির জন্য সর্বনিম্ম ৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম নিতে হবে। তবে কেউ এর চেয়ে বেশি চাইলে তাকে দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর কোয়ালিটি অফ সার্ভিস দিতে হলে তাদের ১০ মেগাহার্টজ লাগবে। নিলামে অংশ নিতে গত ১২ আগস্ট বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সসিং বিভাগে আবেদন জমা দেয় দেশের সবকটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর। যদিও এর আগেই আবেদন করে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। এসব আবেদন যাচাই বাছাই করে ইতোমধ্যে তা যোগ্য বিবেচনা করেছে বিটিআরসি। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিড আর্নেস্ট মানি’ জমা দেয়ার কথা আজ সোমবার হলেও তা আরো দুই দিন পেছানোর কথা ভাবছে বিটিআরসি। যোগ্য অপারেটরদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১ সেপ্টেম্বর এবং নিলাম অনুষ্ঠিত হবে ৮ সেপ্টেম্বর। থ্রি-জি গাইড লাইন অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক ছাড়া তিনটি দেশি মোবাইল অপারেটর এবং একটি বিদেশি অপারেটরসহ মোট ৫টি অপারেটরকে থ্রিজি প্রযুক্তির লাইসেন্স দেয়া হবে। যেহেতু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন বিদেশি অপাটের বিটিআরসি’র নিকট থ্রি-জি’র জন্য আবেদন করেনি, সেহেতু বিদেশি অপারেটরের জন্য রিজার্ভ লাইসেন্সটি দেশি অপারেটরদের দেয়া হবে বলে জানানো হয়।