ব্রিটেনের সাথে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের তুলনা চলেনা : সৈয়দ আশরাফ
যুক্তরাজ্য সফররত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র ও স্পীকার কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় প্রবাসী সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের গণতন্ত্রের সাথে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের তুলনা করলে এটি সঠিক প্রশ্ন হয়না।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন এই দেশে ছিলাম, এই দেশের মেইন স্ট্রিম রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলাম। ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের সাথে জড়িত ছিলাম এছাড়া সমাজ কর্মের সাথেও জড়িত ছিলাম। এই ইষ্ট লন্ডনে দীর্ঘদিন আমার পদচারনা ছিল। এক সময় আমরা যারা বাঙালী ছিলাম ব্রিকলেইনে রাতের বেলাত দূরের কথা দিনের বেলাও একা হাটা নিরাপদ ছিল না। যেকোন সময় আক্রমের শিকার হতে হয়েছিল আমাদের।
এক সময় যুব সমাজ এর প্রতিবাদ করে এবং বর্ণবাদীতের ব্রিকলেইন থেকে উচ্ছেদ করে। সব কিছুই প্রেকটিসের ব্যাপার সময়ের ব্যাপার, তিনি বলেন, ব্রিটেনের গণতন্ত্র কিন্তু সহজে আসেনাই। গত সাড়ে ৪শ বছরে ৭জন স্পীকারকে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র কিন্তু রেবুলেশনের ব্যাপার নয় এটি ধাপে ধাপে আগাতে হয়। আমাদের দেশে মাত্র কয়েকদিন আগে গণতন্ত্র চর্চা শুরু হয়েছে। তারপরও অনেক দেশের তুলনায় অনেক অনেক ভাল। আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্র ছাড়া কোন বিকল্প নাই। গণতন্ত্রের যে চুড়ান্ত লক্ষ্য সেখানে পৌছাতে হবে।
তিনি বলেন ৭০ দশকে আমরা যে ইয়ুথ মুভমেন্ট করেছিলাম । তৎকালিন ইয়াং জেনারেশনকে সাথে নিয়ে। তাদের বলেছিলাম আপনারা চাকুরীতে যান, ব্যবসায় যান। কিন্তু সাথে সাথে রাজনীতিও করতে হবে। তার ফল হচ্ছে আজকের মেয়র, স্পীকার, তিনজন এমপি, শতাধিক কাউন্সিলার। তিনি বলেন, যেখানেই যাননা কেন রাজনীতির কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, এক সময় না এক সময় আসবে এই বিলাতেও বাংলাদেশী অর্জিন মন্ত্রী থাকবে।
তিনি ব্রিটিশ অফিস সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভিসা অফিস দিল্লী থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের কোন সুযোগ নেই। এটি ব্রিটিশ গর্ভমেন্টের সিদ্ধান্ত। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমিসহ আমরা যারা প্রবাসী তাদের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে। এখানে লাখ লাখ মানুষ বসবাস করেন। তাদের আন্তীয় স্বজন মাঝে মুধ্যে বেড়াতে আসেন। তার জন্য দিল্লীতে যেতে হবে কেন। সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।
স্পীকার আব্দুল মুকিত চুন্নু এমই বলেন, বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ সাহেব দীর্ঘদিন টাওয়ার হ্যামলেটসে ছিলেন, এখানে তিনি সমাজকর্ম করেছেন। কমিউনিটির উন্নয়নে তার অবদান রয়েছে। তিনিও একজন প্রবাসী তাই আজ টাওয়ার হ্যামটেসের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে।
সোমবার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র ও স্পীকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে টাউন হলে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এতে বিপুল সংখ্যক কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার আব্দুল মুকিত চুন্নুর সভাপতিত্বে ও কাউন্সিলার খালিস উল্লাহর পরিচালনায় সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনার এম এ হান্নান, পপলার এন্ড লাইম হাউজের এমপি জিম ফিজপেট্রিক, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, ডেপুটি মেয়র সিরাজুল ইসলাম, কাউন্সিলার আয়াস মিয়া, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরিফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, কাউন্সিলার পিটার গোল্ড, কাউন্সিলার সাবিনা আকতার।