লন্ডনে স্ত্রীকে খুন করে ভারতে পালিয়ে গিয়েও রক্ষা পেলো না সিলেটের যুবক
তাজ উদ্দিন, শিলচর (ভারত): লন্ডনে স্ত্রীকে খুন করে ভারতে পালিয়ে গিয়েও রক্ষা পেলো না বাংলাদেশী যুবক মইবুল হক ওরফে আব্দুল শুক্কুর। সে ধরা পড়েছে ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার কাটিগড়া এলাকায়। এপর তাকে শিলচর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এখন ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তাকে তুলে দিতে ওয়ারেন্ট ইস্যু করল ব্রিটিশ হাইকমিশন। সম্প্রতি দিল্লির ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি এসে পৌঁছেছে শিলচর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষের কাছে।
জানা গেছে, মইবুলকে দিল্লি পাঠিয়ে দিতে প্রস্ত্ততি নিচ্ছে জেল কর্তৃপক্ষ। বছর কয়েক আগে লন্ডনের ব্রিকল্যানে স্ত্রীকে হত্যা করে ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সিলেটের আব্দুল শুক্কুর। স্বদেশে দু’দিন কাটিয়ে মেঘালয় সীমান্ত দিয়ে ভারত অনুপ্রবেশ করে কাটিগড়ায় কলাছড়িপার গ্রামে বসতি স্থাপন করে। পরপর দু’বার বিয়েও করে নেয়। প্রথম স্ত্রী মারা গেলেও দ্বিতীয় স্ত্রী বর্তমান। জীবিকার জন্য মেঘালয়ে গিয়ে কয়লা খনিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত সে। এ বছরেরই প্রথম দিকে শুক্কুরের খোঁজে ব্রিটিশ পুলিশের একটি দল ভারতে আসে। সে সময় ব্রিটিশ পুলিশ তাকে খুঁজে বের করতে না পারলেও এখানকার পুলিশের কাছে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে যায়। এরপর তদন্তে নামে কাটিগড়া পুলিশ। মাস কয়েকের মধ্যেই সফলতা আসে। ২৩ মে মেঘালয় থেকে কাটিগড়া আসার পথে কালাইনে শুক্কুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে শিলচর জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সে জেলেই রয়েছে। এদিকে, তার এই গ্রেফতারের খবর লন্ডন পুলিশকে জানালে তাকে সে দেশে নিয়ে যেতে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। জানা গেছে, ২৮ আগস্টের মধ্যেই আব্দুল শুক্কুরকে দিল্লির ব্রিটিশ হাইকমিশনে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কাটিগড়া থানার ওসি স্বপন কুমার দে জানিয়েছেন, শুক্রবার এ ব্যাপারে ব্রিটিশ হাই কমিশন থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে, কাটিগড়ায় থাকাকালে আব্দুল শুক্কুর নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করতে যাবতীয় সরকারি নথিপত্রও হাসিল হয়ে নেয়। এতে তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তিও। তার ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র সহ ওবিসি (আদার ব্যাকওয়ার্ড কাস্ট) সার্টিফিকেট, গ্রাম পঞ্চায়েত সার্টিফিকেট, ভারতের ইনকাম ট্যাক্স বিভাগের প্যান কার্ড, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট সহ বিভিন্ন সরকারি নথিপত্র জোগাড় করতে সক্ষম হয়। আর এতে তাকে সহায়তার দায়ে কাটিগড়ার ওবিসি বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল সাহিদ সহ আরও এক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।