‘বিদেশে গেলে হিন্দুরাও গরুর গোশ্ত খায়’
বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব বলেছেন, ‘বিদেশে গিয়ে হিন্দুরাও গরুর গোশত খায়’।
লালু প্রসাদ যাদব মন্তব্য করেন, ‘গরুর গোশত খাওয়ার ইস্যুকে সাম্প্রদায়িক চেহারা দেয়ার চেষ্টা করছে আরএসএসবিজেপি। বিদেশে গিয়ে অনেকেই এমনকি হিন্দুরাও গরুর গোশত খায়।’
লালু প্রসাদ যাদব উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গরুর মাংস খাওয়া এবং তা বাসায় রাখার অপবাদ দিয়ে এক মুসলিম প্রবীণ ব্যক্তিকে হত্যা করা প্রসঙ্গে মন্তব্য করে গত শনিবার বলেন, ‘কে কি খাবে এজন্য কাউকে হত্যা করা উচিত নয়। এটা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। বিজেপি এ ধরণের সহিংসতা ছড়ানোর জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, ‘হিন্দুরা কি ‘বিফ’ খায় না? যে গোশত খায়, তার জন্য ‘বিফ’ এবং ছাগলের গোশতের মধ্যে পার্থক্য কি?’
লালু প্রসাদের দাবি, ‘বিফ খাওয়া উচিত নয়, কারণ স্বাস্থ্যের পক্ষে তা ভাল নয়। এ থেকে অনেক রোগও হয়। যদিও তার মানে এই নয় যে, যদি কেউ ‘বিফ’ খায় তাহলে তাকে হত্যা করতে হবে।’
লালু প্রসাদের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং। তিনি বলেছেন, ‘হিন্দুরা গরু পালক। তারা কখনো গরুর গোশত খায় না। ভোটের জন্য লালুপ্রসাদ হিন্দুদের বদনাম করছেন। তিনি ওই মন্তব্য প্রত্যাহার না করলে তার বাড়ি থেকেই আন্দোলন শুরু করা হবে।’
পরে অবশ্য লালু প্রসাদ দাবি করেন হিন্দুরাও গরুর গোশত খায় এমন কথা তিনি বলেননি। একটি নিউজ চ্যানেলকে লালু প্রসাদ বলেন, শুধু গরুর গোশত নয়, অন্য পশুর গোশতও ‘বিফ’। গিরিরাজের সমালোচনা প্রসঙ্গে লালু প্রসাদ যাদব বলেন, ‘আমি বলেছি হিন্দু ‘বিফ’ খেয়ে থাকে, আমি এটা বলিনি যে গরুর গোশত খায়। আমি আমার মন্তব্যে অটল রয়েছি। গিরিরাজ সিং কি হিন্দুদের ঠিকাদার?’
এদিকে উত্তর প্রদেশের দাদরিতে গরুর গোশত খাওয়ার অপবাদ দিয়ে মুহাম্মদ আখলাক নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করার তীব্র সমালোচনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কেন্ডয় কাটজু । তিনি বলেছেন, ‘অপরাধীদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।’
সাবেক বিচারপতি কাটজু বলেন, ‘আমি গরুর গোশত খাই এবং তা খেতেই থাকব। আমাকে কে বাধা দিতে পারে? দুনিয়াজুড়ে মানুষ গরুর গোশত খায়। গরু কেবলমাত্র একটি পশু, আমি মা বলে মনে করি না।’
ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভারতের অধিকাংশ নেতা বদমায়েশ ও নিষ্কর্মা, এদের ফাঁসি হওয়া উচিত। এ সব নেতা দেশকে লুট করছে, দ্রুত সবার ফাঁসি হওয়া প্রয়োজন। বেশিরভাগ নেতাকে আমি নিকৃষ্ট বলে মনে করি, যারা দেশকে লুট করেছে, বরবাদ করে দিয়েছে। এখানকার নেতারা সব নাটক করে। এরা চোর, দেশকে লুট করেছে।’ এ প্রসঙ্গ টেনে দেশে বিদ্রোহ আসছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি মার্কেন্ডয় কাটজু।
উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে মুহাম্মদ আখলাক নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে একে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহা। নিহত মুহাম্মদ আখলাকের ছেলে সারতাজ বিমানবাহিনীতে চাকরি করেন।
অরূপ রাহা গত শনিবার জানান, মুহাম্মদ আখলাকের পরিবারকে বিমানবাহিনীর এলাকায় স্থানান্তর করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবার বিমান বাহিনীর এলাকায় শিফট হতে চেয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহা।