লন্ডনে প্রবাসী বিনিয়োগাকারীদের সংবাদ সম্মেলন : গোলাপগঞ্জে কয়েক‘শ একর জমি সরকারীভাবে দখলের পায়তারার অভিযোগ

ইব্রাহিম খলিল: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমধরপুর মৌজায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগকৃত কয়েকশত একর জমি কোন নোটিশ বা আলোচনা ছাড়াই সরকার অধিগ্রহন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা অভিযোগ করেন সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫২ পদাতিক ব্রিগেডের এই ভুমি অধিগ্রহন করছে। শাহ ডেভেলাপার লিমিটেডের ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন লন্ডনে বসবাসরত এই প্রজেক্টের প্রায় সকল বিনিয়োগকারী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন অন্যতম বিনিয়োগকারী লোকমান উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয় থেকে শুরু করে অধ্যাবধি দেশের সকল দুঃসময়ে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। এই বৈশ্বিক মন্দার পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রবাসী বাংলাদেশীরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীর আহববানে সাড়া দিয়ে দেশে-প্রবাসে অবস্থানরত ৪৪ জন প্রবাসী বিনিয়োগকারী ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান মিলে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমধরপুর মৌজায় শাহ ডেভেলাপার লিমিটেড নামে একটি কোম্পানী গঠন করেন। এর মধ্যে ৩৬ জনই প্রবাসী বিনিয়োগকারী। কোম্পানীর অধিকাংশ পরিচালক লন্ডন, আমেরিকা, সৌদী আরব, ইটালী ও জাপানে বসবাসরত। একটি সমন্বিত এগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ফিস পার্ক এন্ড ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হয় উল্লেখিত জায়গায়। তারই ধারাবাহিকতায় ফিসারীজ, হ্যাচারী, পোলল্ট্রী ফিড মিল, ফিস ফিড মিল সহ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। এই প্রজেক্টের কাজ আগামীতে আরো বেগবান করার চিন্তা ভাবনা করছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্ত হঠাৎ করে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মারাত্মক সংকটে ফেলেছে তাদের। বাংলাদেশের বিভিন্ন দুঃসময়ে বিলেতে নিরন্তন কাজ করেছেন এমন প্রবাসী ও প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি নেতৃবৃন্দরা বিনিয়োগ করেছেন গোলাপগঞ্জের এই প্রজেক্টে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ সেন্টারের চীফ ট্রেজারার আলহাজ্ব খন্দকার ফরিদ উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাফিজ মজির উদ্দিনম বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন ইউকের সেক্রেটারী এমএ মুনিমও রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ক্যান্টনমেন্টের পূর্ব পাশে সরকারের হাজার হাজার একর খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারী জমি অব্যাবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রস্তাবিত ভূমি সিলেট মেট্রোপলিটন সিটির বর্ধিত এলাকায় অবস্থিত। বর্ধিত সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় সেনানিবাস স্থাপনের বিষয়টি যুক্তিযুক্ত আদৌ কতখানি সে বিষয়টিও বিবেচ্য বটে। সিলেটের বর্তমান ক্যান্টনমেন্ট সিলেট শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত। এমন অবস্থায় এই ক্যান্টনমেন্টের নিকটবর্তী ও শহরের বাইরে অবস্থিত এলাকা হলো হরিপুর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট। অত্র এলাকাগুলোতে বড় হাওর ও মেদল বিলে হাজার হাজার সরকারী খাস জমি অব্যাবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। সেখানে সরকার চাইলে ক্যান্টলমেন্ট স্থাপন করতে পারে। কিন্ত হাজার মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন সিদ্ধান্ত কখনোই কাম্য নয়। বিনিয়োগাকীরা এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমএ বাছিত, জালাল আহমদ রিপন, হেলাল উদ্দিন, মোস্তাব উদ্দিন, জালাল উদ্দিন, মো. আব্দুল মানিক, মো. ফয়সল আহমদ, এম মুনিম ও বাংলাদেশ থেকে আগত বিনিয়োগকারী এনামুল হক সরদার প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button