সিরিয়ায় বড় ধরনের ভুল করছে রাশিয়া : এরদোগান

Erduganসিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ চালিয়ে রাশিয়া বড় ধরনের ভুল করেছে। এর মাধ্যমে দেশটি এ অঞ্চলে নিঃসঙ্গ বা মিত্রহীন হয়ে পড়বে। এমনটাই মনে করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। গত রোববার ফ্রান্সের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে তিনি বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এরদোগান বলেন,সিরিয়ায় রাশিয়ার গৃহীত পদক্ষেপ তুরস্কের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাশিয়া এ মুহূর্তে একটি বড় ধরনের ভুল করছে। আমার কাছে মনে হয়, এ ধরনের পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে মস্কো এ অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া এখানে কী অর্জন করতে চায়? বাশার আল-আসাদ সিরিয়ায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছেন। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাশিয়া ও ইরান এই ব্যক্তিকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যেসব দেশ আসাদ সরকারকে উস্কানি দিচ্ছে তারা ইতিহাসের কাছে দায়ী থাকবে।
সিরিয়ার জনগণের প্রতি রাশিয়া ও ইরানের কোনও দায়বদ্ধতা আছে কি না সেদিকেও ইঙ্গিত করেন এরদোগান। বলেন, এই দুই দেশ সিরিয়ার কতজন শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে?
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটির বিপুল সংখ্যক মানুষ তুরস্কে পাড়ি জমাচ্ছেন। বর্তমানে তুরস্কে প্রায় ২০ লাখ সিরীয় নাগরিক অবস্থান করছেন।
এরদোগান বলেন, সিরীয়দের জন্য আমরা সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার খরচ করেছি, এটা ক্রমেই বাড়ছে। নৈতিক দায়িত্বের অংশ হিসেবেই আমরা এটা করে যাচ্ছি।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব দেন এরদোগান। তার ভাষায়, ‘একটি নো-ফ্লাই জোন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অন্যথায় এটা একটা মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হবে।’
ফ্রান্সে এরদোগানের শোডাউন
এদিকে ফ্রান্সে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের এক নির্বাচনী জনসভায় প্রায় ১২,০০০ লোকের সমাগম ঘটেছে।
আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য তুরস্কের নির্বাচন উপলক্ষে  ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ শহরে গত রোববার তার সমর্থকরা এ সমাবেশের আয়োজন করে।
তুরস্কে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপ পার্টির (একেপি) সমর্থকরা তাদের দেশের হাজার হাজার পতাকা নাড়িয়ে রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানান।
ফ্রান্স, জার্মানী, বেলজিয়াম ও সুইডেন থেকে আগত প্রবাসী তুর্কিদের উদ্দেশ্যে এরদোগান বলেন, যারা ‘অস্ত্র ও বোমাবাজির’ ভয় দেখিয়ে দেশকে ‘সন্ত্রাসবাদের’ অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।
২ বছরের অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কাস পার্টি (পিকেকে) জুলাইয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫০ জনেরও বেশি তুর্কি সেনা ও পুলিশকে হত্যা করেছে।
এদিকে একই সময়ে ফ্রেন্স ফেডারেশন অব আলেভিস নামক একটি সংখ্যালঘু গ্রুপ এরদোগানের বিপক্ষে মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগে একটি সমাবেশ করে, যেখানে মাত্র ১৫০০ লোক উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনটির নেতা এরদাল কলিসিকায়া বলেন, ‘তুরস্কের প্রেসিডেন্টের উচিত দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠা কিন্তু এখানে তিনি নির্বাচনী সমাবেশ করছেন।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button