সাহিত্যে নোবেল পেলেন সেটলানা আলেক্সিয়েভিচ
সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বেলারুশের গদ্যকার, সাংবাদিক সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ, যার লেখাকে এই সময়ের মানবজীবনের ‘ক্লেশ আর সাহসিকতার যুগলবন্দী’ অভিহিত করেছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
৬৬ বছর বয়সী সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ গত বছরও এ পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন।
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১১২তম লেখক হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে। তিনি হলেন- চতুর্দশ নারী, যিনি সাহিত্যে নোবেল পেলেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালে কানাডার সাহিত্যিক অ্যালিস মুনরো পেয়েছিলেন এই নোবেল। দুই বছর পর আবারও নোবেল পেলেন আরেক নারী সাহিত্যিক।
আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে পুরস্কার বাবদ ৮০ লাখ ক্রোনার তুলে দেয়া হবে।
সোয়েতলানার জন্ম ইউক্রেনে হলেও বেড়ে ওঠা বেলারুশে। বাবা প্রথমে সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। অবসর নিয়ে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বেলারুশে চলে আসেন। বাবা-মা দু’জনেই শিক্ষকতা শুরু করেন। মিন্স্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেন সোয়েতলানা।
প্রথমে পোল্যান্ডের সীমান্তে একটি সংবাদপত্রে চাকরি নিলেও পরে মিন্স্কে ফিরে এসে সাংবাদিকতা শুরু করেন সোয়েতলানা। কাজ করতে করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া মহিলাদের সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করেন। এই সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তাঁর বই ‘ভয়েসেস অব ইউটোপিয়া’। একইভাবে ইউক্রেনের চেরনোবিলে পারমাণবিক দুর্ঘটনার পরে লেখেন ‘ভয়েসেস অব চেরনোবিল : ক্রনিকাল অব দি ফিউচার’।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান অভিযান নিয়েও লিখেছেন। তাঁর মতামত অনেক সময়েই রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের রোষাণলে পড়েছে। ফলে মাঝে-মধ্যেই দেশ ছেড়ে ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেনে বাস করতে হয়েছে তাঁকে।
গত বছর সাহিত্যে নোবেল পান ফরাসি ঔপন্যাসিক প্যাত্রিক মোদিয়ানো, যার গল্পের ভুবন গড়ে উঠেছে মানব-মনের স্মৃতি-বিস্মৃতির খেলা, আত্মপরিচয়ের সঙ্কট আর প্যারিসে নাৎসি দখলদারিত্বের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে।
সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুসারে গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অবদানের জন্য প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুদানের অর্থে ১৯৬৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার চালু হয়।
শুক্রবার শান্তি এবং ১২ অক্টোবর সোমবার অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।