মিসরে সেনা হামলায় মসজিদ পুড়ে ছাই

Egypt
সেনা অভিযানের সময় আগুনে পুড়ছে মিসরের একটি মসজিদ, ডানে পুড়ে যাওয়া কুরআন শরিফের একটি কপি দেখছেন একজন মুসল্লি

আবুল কালাম আজাদ মিসর: মিসরে গত দুই সপ্তাহের সেনা অভিযানে প্রাচীন রাবেয়া আল আদইয়াসহ কায়রোর একাধিক মসজিদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেই সাথে পুড়ে গেছে কয়েক শ’ কুরআন শরিফ। কায়রোর সর্ববৃহৎ মিনার রামসিস স্কয়ারের আল ফাতাহ মসজিদেও হামলা করে মিনার জ্বালিয়ে দেয় সেনারা। অন্য দিকে গণহত্যায় যারা নিহত হয়েছে তাদের লাশ কোথাও জায়গা না পেয়ে মসজিদে রাখা হলে লাশসহ মসজিদ জ্বালিয়ে দেয় তারা।
এ ছাড়া জেলা শহরগুলোতে মসজিদ ও মসজিদসংলগ্ন শিাপ্রতিষ্ঠান এবং দাতব্য সংস্থায় হামলা, ভাঙচুর করছে মোবারক ও সিসিপন্থী স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। আগুনে মসজিদের কার্পেট ও কারুকাজসহ সব কিছু বিলীন হয়ে গেছে।
পরিকল্পিতভাবে গণহত্যায় নিহত এবং আহতদের সংখ্যা কমাতে ও তথ্যপ্রমাণ ধ্বংস করতে রাবেয়া স্কয়ারের মসজিদ ও হাসপাতাল জ্বালিয়ে দেয়া হয়। অনেক মুরসি সমর্থক সেখানেই পুড়ে কয়লা হয়ে যান বলে জানান হাসপাতালের ইনচার্য ডা: উমর ফারুক। তিনি আরো বলেন, নিহতদের পরিবার লাশ নিতে হাসপাতালের সামনে ভিড় করায় বেদম লাঠিচার্জ করে শোকার্ত মানুষদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনা সদস্যরা। আগুন নিভে গেলে লাশ বা লাশের কয়লা নিয়ে দাফন দিতে গেলে সরকারি গোরস্থানের কর্মচারীরা লাশ আত্মহত্যা বা আগুনে পুড়ে মারা গেছে বলে পরিবার থেকে লিখিত নেয়া হয় বলেও জানান তিনি।
শুক্রবারে আব্বাসিয়ার আল নুর ও রামসিসের আল ফাতাহ মসজিদে জুমার নামাজ পড়া বন্ধ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়, ফলে গত শুক্রবার নির্দেশ উপো করেই নামাজ শেষে বিােভ করেছে মুরসি সমর্থকেরা। কায়রোসহ সারা দেশে পাঁচ শতাধিক মুরসি সমর্থক ইমামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাসের সিটির আল ঈমান মসজিদসহ সেনাদের বুলেটে অনেক পুরনো মসজিদের দেয়ালে দাগ হয়ে আছে। রাবেয়া স্কয়ারের তাঁবুগুলো জ্বলিয়ে দেয়ার পর কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ার মধ্যে কোনো মতে মায়েরা শিশুদের নিয়ে আশপাশের মসজিদে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা করে বা আগুন ধরিয়ে দেয় সেনারা।
তবে রাবেয়া স্কয়ার ও নাহাদা স্কয়ারে খ্রিষ্টান সেনাদের সংখ্যা বেশি থাকায় তারা হামলার সুযোগে মসজিদও জ্বালিয়ে দেয় বলে ধারণা করছে ইসলামপন্থীরা। তবে মিসরের মিডিয়া মসজিদগুলোতে আগুন দেয়ার দায়ভার বিভিন্নভাবে বিক্ষোভকারীদের ওপর দেয়ার চেষ্টা করছে। কায়রোতে ছোট-বড় এক হাজারের বেশি পুরনো মসজিদ রয়েছে। রাবেয়া আল আদইয়া ও আল ঈমান মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম। মসজিদ পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়াতে সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই সেনাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে। অন্য দিকে পবিত্র কুরআনের ভাষায় মসজিদ ধ্বংসকারীকে সব চেয়ে বড় জালেম হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button