সিরিয়ায় রাশিয়ার হস্তক্ষেপের নেপথ্যে ইরান !
রাশিয়ার সামরিক অভিযান সিরিয়া গৃহযুদ্ধের দৃশ্যপটই পাল্টে দিয়েছে। কিন্তু কেন হঠাৎ রাশিয়ার সিরিয়া অভিযান? রয়টার্স তার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়ার এই আক্রমণে মুখ্যভূমিকায় আছে ইরান।
গত জুলাইয়ে মস্কোয় ইরানের এক শীর্ষ জেনারেলের সফরই ছিল সিরিয়ায় রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করার প্রথম পদক্ষেপ। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে নতুন করে সমর্থন করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটি রাজনৈতিক চুক্তির মধ্য দিয়ে ইরান-রাশিয়ার নতুন জোটটাও হয় তখনই।
ইরানের ওই জেনারেলের নাম কাসেম সোলেইমানি। ইরানের রেভল্যুশনারী গার্ড’র বিশেষ শাখা কুদস ফোর্সের কমান্ডার তিনি। এ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ সরাসরি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির হাতে। রাশিয়া সিরিয়ায় হামলা করলে কিভাবে গৃহযুদ্ধে নাজুক অবস্থায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ জয়লাভ করবেন এবং মধ্যপ্রাচ্য রাশিয়ার নাগালেরমধ্যে থাকবে সে পরিকল্পনাটি দেন সোলেইমানি।
যদিও রাশিয়া দাবি করে আসছে, আসাদের অনুরোধেই তারা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়েছে। সোলেইমানি রাশিয়াকে বুঝিয়েছিলেন, আসাদ কয়েকটি অঞ্চলে যুদ্ধে হারলেও, তাকে এ যুদ্ধে জেতানো সম্ভব, যদি মস্কো হামলায় অংশ নেয়। তার এ যুক্তি অবশেষে মেনে নেয় রাশিয়া।
রয়টার্স তার প্রতিবেদনে আরো দাবি করে, কয়েকমাসের পরিকল্পনার পর চরমপন্থিদের দমনের নামে শুরু হয় আসাদ বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা। গত সপ্তাহ থেকে রাশিয়া সিরিয়ায় বিমানহামলা শুরু করেছে। বিদ্রোহীদের ওপর এ বিমান হামলা চলার পাশাপাশি সেখানে স্থল অভিযানের জন্য ইরানের বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের প্রবেশ থেকেই এটি ষ্পষ্ট যে, কয়েকমাস ধরেই এ পরিকল্পনা চলেছে।
উর্ধ্বতন এক আঞ্চলিক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলে, সোলাইমানি এরই মধ্যে সিরিয়ায় স্থল অভিযানের দেখভাল শুরু করেছেন। রাশিয়া ও ইরানের যৌথসামরিক অভিযানও তদারকি করছেন তিনি। ইরানের হয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য খামেনিই সোলেইমানিকে নিয়োগ করেন। এরপর সোলেইমানি মস্কো যান এবং বিষয়টিনিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। মস্কোর বৈঠকের পর তিনি বেশ কয়েকবার সিরিয়াও গেছেন।