ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজনে উলামা পরিষদের প্রতিবাদ
ইন্দোনেশিয়ার সরকার বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় আলেমরা যে প্রতিবাদ করেছেন তার প্রতি দৃঢ় সমর্থন দিয়েছেন দেশটির সর্ব্বোচ্চ ইসলামী কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়ান উলামা কাউন্সিল। সংস্থা এই আয়োজনকে ইসলামের শিক্ষার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।
এএফপি জানিয়েছে, উলামা পরিষদের সিনিয়র কর্মকর্তা মুহিউদ্দিন জুনাইদি জাকার্তায় সাংবাদিকদের বলেন, নারী দেহ প্রকাশ্যে অনাবৃত করা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম বা নিষিদ্ধ।
প্রতিযোগিতার সময় যদিও বিকিনি পরার বিষয়টি বাদ দেয়া হয়েছে তবু প্রতিযোগীদের আঁটসাঁট পোশাক পরা এবং দেহের অনাবৃত অংশগুলো প্রদর্শনের বিষয় এখনো রয়েছে।
সরকার আগামী মাসে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজক হওয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করায় আলেমরা এর প্রতিবাদ করেছেন।
তারা প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনেরও অঙ্গীকার করেছেন। তারা বলছেন, নারীর দেহ প্রদর্শন ইসলামের শিক্ষার পরিপন্থী।
বিরোধিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোক্তারা প্রতিযোগীদের বিকিনি পরার বিষয় বাদ দিতে সম্মত হয় যাতে আপত্তি না থাকে।
বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার ২৪ কোটি মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশই মুসলমান। সর্বোচ্চ ইসলামী কর্তৃপক্ষ উলেমা পরিষদ বিরোধীদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলানোর কারণে বিরোধিতা আরো জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। উলেমা পরিষদ এই প্রতিযোগিতা টিভিতে না দেখার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিষদের উপ-প্রধান আমিরাসিয়া তামবুমান বলেন, প্রতিযোগিতার ব্যাপারে ছলনা করে জনগণকে বলার চেষ্টা করা হচ্ছে, এই প্রতিযোগিতা শুধু দৈহিক সৌন্দর্য নয়, ভেতরের সৌন্দর্যেরও। জুনাইদি বলেন, উলেমা পরিষদ তার অবস্থান এখন পরিষ্কার করেছে। এখন এটা কর্তৃপক্ষের ব্যাপার তারা প্রতিযোগিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে কিনা।
আগামী মাসে পরিকল্পিত এই প্রতিযোগিতায় ১৩০ জনের বেশি সুন্দরী প্রতিযোগী অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বালিদ্বীপের বিনোদন কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় এই প্রতিযোগিতায় কয়েকটি আইটেম থাকবে। চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতা হবে জাকার্তার বাইরে বোগোরে।
২০১২ সালে পপ তারকা লেডিগাগা বিরোধিতাকারীদের সমালোচনার মুখে তার কনসার্ট সফর বাতিল করেন। সংক্ষিপ্ত পোশাক পরার কারণে তার বিরোধিতা হয়।
ইসলাম হচ্ছে নৈতিকতার ধর্ম। এটা নারীদের সম্মান ও মর্যাদা বজায় রেখে তার পদমর্যাদাকে সমুন্নত করে সংযম ও বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
শুধুমাত্র সৌন্দর্য প্রদর্শনের বস্তুতে পরিণত করার চেষ্টা থেকে ইসলাম মুসলিম নারীদের রক্ষা কবচ হিসাবে কাজ করে।
আলেমদের মতে, নারীদের দেহ ঢেকে রাখা ও নিজেদের রক্ষা করা ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বাধ্যতামূলক। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী তরুণীদের আল্লাহ প্রদত্ত শরীর কাঠামো মানুষের সামনে প্রদর্শন করতে হয় না যা সারা বিশ্বের মানুষ প্রত্যক্ষ করে। এটা ইসলামের দৃষ্টিতে পুরোপুরি হারাম বা নিষিদ্ধ। সুতরাং কোন মুসলমানের ব্যক্তিগতভাবে ও ইসলামী রাষ্ট্রের উচিত হবে না এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজনের অনুমতি দেয়া।