রোহিঙ্গাদের রক্ষার আহ্বান অ্যামনেস্টির
বর্ষা শেষে আবার সাগরে ভাসবে নৌকা, আবার শুরু হতে পারে মিয়ানমার ছেড়ে আসতে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম এবং অসহায় মৃত্যু- তাই আগেভাগেই রোহিঙ্গাদের রক্ষার প্রস্তুতি নিতে বলেছে অ্যামনেস্টি।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, অবর্ণনীয় অত্যাচার সয়ে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানো ১০০ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করেছে এই প্রতিবেদন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও এসেছে অ্যামনেস্টির এই প্রতিবেদন। শীর্ষ নিউজ।
৪২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, নির্যাতন থেকে বাঁচতে মানব পাচারকারীদের মাধ্যমে মিয়ানমার ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিপর্যয়ই ডেকে আনছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা। টাকা আদায়ের জন্য তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায় মানবপাচারকারীরা। টাকা না পেলে হত্যা করে সাগরে ভাসিয়েও দেয়া হয় লাশ। ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থানরত রোহিঙ্গারাই অ্যামনেস্টিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গারা বলেছেন, এখনো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা সাগরপথে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। বর্ষা শেষ হলেই নৌকাগুলো গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করবে। মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া এখন থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে আবারও মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে কমপক্ষে ৩৭০ জন মারা যান। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।
মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়া সরকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া ৭ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে সম্মত হলেও বাকিদের ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে অটল বাংলাদেশ সরকার। এই তিনটি দেশে আটকে থাকা বাঙালিদের ফিরিয়ে এনেছে। এখনো যারা দেশ তিনটিতে রয়েছেন, তাদেরও ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক মুখপাত্র ভিভিয়ান ট্যান ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারেও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। মিয়ানমার সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।