ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদ কারো ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয় : বিলাল আহমদ

DCMসম্প্রতি ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়ায় প্রকাশিত ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদ সম্পর্কিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বেকনট্রিহিথ ইসলামিক সোসাইটির চেয়ারম্যান বিলাল আহমদ (মিলন)। তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল আল্লাহর ঘর মসজিদ এবং আমার পরিবারকে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এই কাজ করে যাচ্ছেন। কারণ কয়েক সপ্তাহ আগে তথ্যবিহীন ও প্রমাণাদি ছাড়া একটি প্রতিবেদন বাংলা টিভিতে প্রচার করা হয়। এছাড়া মসজিদের ইতিহাস সম্বলিত প্রকাশিত একটি ম্যাগাজিন সর্ম্পকে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্যেরও তিনি প্রতিবাদ করেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি  বলেন, এই ম্যাগাজিনে আমি মসজিদ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যে সব প্রতিকুলতার সম্মুখিন হয়েছি এবং কিভাবে তা আমরা পাড়ি দিয়ে আজ এই পর্যায়ে এসেছি তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এছাড়া এটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাদের অবদান রয়েছে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এই মসজিদের ইতিহাস থেকে তাদের নাম যেন মুছে না যায়। এতে ভবিষ্যতে মসজিদের সেবায় যারা আসবেন তারা এর সঠিক ইতিহাস জানতে পারবেন এবং কাজ করতে পারবেন। ব্যক্তিগত জীবনে আমি পেশাদার লেখক কিংবা সাহিত্যিক নই; তাই ভাষাগত ভুল থাকতে পারে। এই লেখার মাধ্যমে আমি যদি কারো মনে দুঃখ দিয়ে থাকি তবে আমি দুঃখিত। কিন্তু অনেকে মন্তব্য করেছেন এই ম্যাগাজিনে ভুল তথ্য রয়েছে; এই বিষয়ে ম্যাগাজিনের প্রথমে আমি অনুরোধ করেছি; যদি কারো কাছে ভুল তথ্যের প্রমাণ থাকে তবে এটি বিবেচনা করা হবে। এই ম্যাগাজিনটি কাউকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অসম্মান কিংবা জনসাধারণের কাছে দেয়ার জন্য এবং আমার ব্যক্তিগত অবদান প্রচারের জন্য লেখা হয়নি।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে মসজিদকে আমার পারিবারিক সম্পত্তি উল্লেখ করে যে মিথ্যা খবর প্রচার করা হয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। মসজিদ আল্লাহর ঘর। এটি কোন মুসলমানের পারিবারিক সম্পত্তি হতে পারে না। পরিবারের সদস্যগণ একটি ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্বে থাকতে পারেন কিন্তু এতে এটি কারো পারিবারিক সম্পত্তি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে না। বৃটেনে অনেক ইসলামিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো পারিবারিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং আইনগতভাবে এতে কোনো বাধা নেই। এই মসজিদ প্রতিষ্ঠার শুরুতে আমি আমার পরিবারের কয়েকজন সদস্য এবং নিকটস্থ দুইভাইদেরকে নিয়ে কাজ শুরু করি। এই সময়ে আমি অনেকের নিকট বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য-সহযোগীতার জন্য অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু আমি আশানুরূপ কোনো সাড়া পাইনি। আল্লাহর অশেষ রহমতে বৃটেনের মুসলমান ভাইবোনরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠায় সার্বিকভাবে সহযোগীতা করেছেন এবং আমরা এলাকাবাসী সবাই এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি যেখানে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।
যেহেতু এটি একটি চ্যারিটি অর্গানাইজেশন তাই আমরা ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদ সম্পর্কিত মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এরই অংশ হিসেবে আমাদের আইনজীবির মাধ্যমে তাদের কাছে নির্ধারিত সময়ের মাধ্যমে সবধরণের তথ্য এবং প্রমাণাদি উপস্থাপনের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোনো উত্তর তারা দিতে সমর্থ হননি।
২০০৯ সাল থেকে ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালে মসজিদের জন্য নিজস্ব বিল্ডিং ক্রয় করা হয়। এরপর সবার সার্বিক সহযোগীতায় মসজিদের নতুন বিল্ডিং নির্মাণ এবং সেইসাথে এই জায়গার পূর্বের মালিককে পুরো অর্থ পরিশোধ করা হয়। এখন এটি বেকনট্রিহিথ ইসলামিক সোসাইটির (ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদ) নিজস্ব প্রোপার্টি। এই মসজিদ এলাকার কমিউনিটির সবার সাথে কাজে করে যাচ্ছে। প্রতিমাসে আমাদের এখানে স্থানীয় কাউন্সিলার এবং পুলিশের সার্জারী পরিচালনা করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মসূচী এই মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।
পরিশেষে আমি বলতে চাই, ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদ আল্লাহর ঘর তাই এটি একমাত্র তারই সম্পত্তি। আমি সবাইকে নিয়ে দ্বীনের কাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি মাত্র। এখানে আমার ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে বলে যে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে তা সর্ম্পূণ ভিত্তিহীন এবং অবান্তর। আর যারা মসজিদ এবং আমার বিরুদ্ধে এইসব করছেন; তাদেরকে বলতে চাই সত্যকে কখনো লুকিয়ে বা চাপিয়ে রাখা যায় না। ইনশাল্লাহ এই বৃটেনের কমিউনিটির মানুষের সামনের একদিন ডেগেনহাম সেন্ট্রাল মসজিদের সঠিক ইতিহাস উদ্ঘাঠিত হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button