স্নোডেনকে সুরক্ষা দেওয়ার পক্ষে ইইউ পার্লামেন্ট
যুক্তরাষ্ট্রের স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করা সাবেক এনএসএ কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনকে সুরক্ষা দেয়া এবং তাকে হস্তান্তর না করার আহ্বান সম্বলিত প্রস্তাবনার পক্ষে ভোট দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার হওয়া এই প্রস্তাবনার পক্ষে পড়ে ২৮৫ এবং বিপক্ষে পড়ে ২৮১ ভোট। ভোট দেওয়ায় কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না।
প্রস্তাবনায় এডওয়ার্ড স্নোডেনের ওপর থেকে যে কোনো ধরনের অপরাধের অভিযোগ তুলে নেয়া এবং তৃতীয় কোনো পক্ষ থেকে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর না করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। শুধু তা-ই নয়, স্নোডেনকে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের রক্ষক’ হিসেবে সুরক্ষা দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয় এতে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক ঠিকাদার স্নোডেন বিশ্বজুড়ে সংস্থাটির গোপন নজরদারির তথ্য ফাঁস করে দেন। স্নোডেন কাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং এনএসএ’কে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যান স্নোডেন। এরপর তিনি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক মাসের বেশি সময় অবস্থান করার পর দেশটিতে আশয় পান।
টুইটারে বৃহস্পতিবারের ভোটকে অসাধারণ একটি বিষয় বলে বর্ণনা করেন স্নোডেন।
তিনি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আঘাত নয়। বরং বন্ধুর হাত সামনে বাড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয়। সামনে এগিয়ে যাবার সুযোগ এটি। ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বলছে, স্নোডেন দেশে ফিরলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। স্নোডেনের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির আইন লঙ্ঘনের অভিযোগসহ গুরুতর আরও দুইটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মাসে বিবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্নোডেন বলেন, রাশিয়ার নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফেরার চুক্তির আওতায় তিনি বহুবার যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার এখনও তাকে কিছু জানায়নি। তিনি উত্তরে অপেক্ষায় আছেন। বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভোটের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি জানান, স্নোডেনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। তিনি বলেন, তাকে (স্নোডেন) যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসতে হবে এবং এখানে যথাযথ প্রক্রিয়ার পর বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। প্রথম থেকে এটিই আমাদের অবস্থান ছিল। আমরা মনে করি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে গভীর সঙ্কটে ফেলেছেন এবং এজন্য তার সমুচিত শাস্তি হওয়া উচিত।