নতুন পায়রা সমুদ্রবন্দর বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ
দক্ষিণাঞ্চলে নতুন যে সমুদ্রবন্দরটি গড়ে তোলা হচ্ছে, সেটি আগামী দুই মাসের মধ্যেই আংশিকভাবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন।
পটুয়াখালি জেলার পায়রা সমুদ্রবন্দরটি হবে বাংলাদেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এমনকী এই অঞ্চলের দেশগুলোর সমুদ্রবন্দরের চাহিদা মেটাতেও ভূমিকা রাখতে পারবে।
তবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, পদ্মা সেতু নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত তারা পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবেন না।
পটুয়াখালি জেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে গড়ে তোলা হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন সমুদ্রবন্দর পায়রা।
কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম যেভাবে বাড়ছে, তাতে চট্টগ্রাম ও মংলার বাইরে আরেকটি সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলো এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছে পোশাক শিল্প। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় ৮০ শতাংশ করে এই শিল্প।
ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে মধ্যম মেয়াদে পোশাক শিল্পই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে থাকবে। আর সে কারণে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো এই শিল্পের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমই-এর সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলছেন, পদ্মা সেতু তৈরি হলেই কেবল তাঁরা পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবেন ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম পায়রা বন্দরের অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলছেন, সড়ক ও রেল অবকাঠামো গড়ে তোলা ছাড়া পায়রা বন্দরের পুরো সক্ষমতা কাজে লাগানো যাবে না।
ব্যবসায়ীদের মতে, সবচেয়ে বড় বন্দর চট্টগ্রামের বর্তমান সক্ষমতা প্রায় পুরোটা কাজে লাগানো হচ্ছে, তাই একটি গভীর সমুদ্রবন্দর দেশের জন্যে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
তবে ড. মোয়াজ্জেম মনে করেন, পায়রা সমুদ্রবন্দরের একটি আঞ্চলিক গুরুত্বের দিকও রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, পায়রা সমুদ্রবন্দরটি ডিসেম্বেরে আংশিকভাবে চালু হওয়ার পর ২০২৩ সাল নাগাদ একটি সম্পূর্ণ বন্দর হিসেবে কাজ করতে পারবে।
আর চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো, এটিকে ধীরে ধীরে একটি গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তরিত করা।
পায়রা বন্দরটি আংশিকভাবে চালু করার লক্ষ্য নিয়েই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি এগারো’শো কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। -বিবিসি বাংলা