সিলেট জেলার সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন রাগীব আলী
কবির আহমদ: প্রবাসী অধ্যুষিত হযরত শাহজালালের পুণ্যভূমি সিলেট জেলার ১০৪টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত হলেন প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সমাজসেবামূলক অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বরেণ্য শিক্ষানুরাগী ও শিল্পপতি দানবীর ড. রাগীব আলী। গত শনিবার সিলেটের সকল ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের পক্ষে শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনের ডালি সাজিয়ে বরণ করা হয় এ গুণী মানুষকে। সকাল ১১টায় নগরীর পাঠানটুলাস্থ সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে গাঁও-গেরামের মানুষের হৃদ্যিক উষ্ণ ভালোবাসায় সিক্ত হলেন রাগীব আলী।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা দানবীর ড. রাগীব আলীকে দেশে-বিদেশে দানশীলতার অনন্য উদাহরণ উল্লেখ করে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করার দাবি তুলেন। তারা বলেন, ব্যক্তি ড. রাগীব আলীকে নয়, এ সম্মান জানানো হবে তার কর্ম ও দানশীলতার স্বীকৃতি।
রাগীব আলী সংবর্ধনা পরিষদের আহবায়ক সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ মকন মিয়ার সভাপতিত্বে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় অধ্যাপক বিগ্রেডিয়ার (অব:) ডা: এ মালিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. কবির হোসেন, সিলেটের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজ জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মেজর জেনারেল (অব.) ডা: মো. নাজমুল ইসলাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি ড. কবির চৌধুরী, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়েছুর রহমান চৌধুরী, দৈনিক সিলেটের ডাক এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক দেওয়ান তৌফিক মজিদ লায়েক, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংবর্ধনা পরিষদের সদস্য সচিব বিশ্বনাথ লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া। মানপত্র পাঠ করেন গোলাপগঞ্জের লক্ষণাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নছিরুল হক শাহীন। সংবর্ধনা আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সংবর্ধনা পরিষদের কো অর্ডিনেটর বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট রফিকুল হক। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন বিশ্বনাথ খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী। বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের পক্ষে একজন করে প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শহীদ আহমদ, দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. হাবিব হোসেন, বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন, ওসমানীনগরের উসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোতাহির আলী, কোম্পানীগঞ্জের পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শামসু মিয়া চৌধুরী জল্লাদ, জকিগঞ্জের খলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কবির আহমদ, গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজির উদ্দিন চাকলাদার, ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম মুরাদ, গোয়াইনঘাট লেঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুল হক খোকন, কানাইঘাট ঝিংগাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক আহমদ চৌধুরী, বিয়ানীবাজারের শেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতার হোসেন খান জাহেদ, জৈন্তাপুরের চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু জাকারিয়া মো. আব্দুল বারী। শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন কানাইঘাট রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ডা. মানিক মিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব:) ডা: এম এ মালিক বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা দল-মত নির্বিশেষে দানবীর ড. রাগীব আলীকে সংবর্ধনা দিয়ে অনন্য নজির স্থাপন করলেন। ড. রাগীব আলী টাকা-পয়সা অকাতরে মানুষের কল্যাণে ব্যয় করছেন- এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৃষ্টি মূলত মানুষের মঙ্গলের জন্য। দানবীর রাগীব আলী অনেকের জন্য অনুকরণীয়। আমার বিশ্বাস-ড. রাগীব আলী অবশ্যই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাবেন। মানুষের মঙ্গলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবর্ধনার জবাবে দানবীর ড.রাগীব আলী বলেন, এ সংবর্ধনার মাধ্যমে আমি নই, পুরো সিলেটবাসী সম্মানিত হয়েছেন। এ সংবর্ধনা আজীবন নিজের স্মৃতিপটে থাকবে উল্লেখ করে ড. রাগীব আলী-আমৃত্যু মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জীবনে আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। তবে, ভালোবাসা পেয়ে আমার কর্মপ্রেরণা উদ্দীপ্ত হয়, মনোবল নতুন করে জাগ্রত হয়। সমাজকে যেন আরো কিছু দিতে পারেন- তিনি সকলের কাছে এই দোয়াই কামনা করেন। সিলেট জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের একজন করে দরিদ্র শিক্ষার্থীকে তিনি তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহে বিনামূল্যে পড়ালেখার সুযোগ দানের ঘোষণা দেন।