শিরাজীর বাণীকুঞ্জে নজরুলের মধুর স্মৃতি
সৈয়দ শামীম শিরাজী: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী প্রতি বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। এ বিদ্রোহী কবির স্মৃতিচারণ করে প্রেস মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ফলাও করে কবির অনেক স্থানের অনেক স্মৃতি অনেক কিছুই প্রচার করার জন্য সকলকে সাধুবাদ জানাই। সেই সাথে বলি কবির অনেক অখ্যাত স্মৃতি বিখ্যাত হয়ে প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পেলেও তাঁর জীবনের পরম পাওয়া বিখ্যাত স্মৃতিটার দিকে কেউ নজর দিচ্ছেন না। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নিজের মুখে বলা সবচেয়ে সম্মান, আদর আর আতিথেয়তার স্থান ঐতিহ্যবাহী সিরাজগঞ্জ জেলার ‘বাণীকুঞ্জ’ (শিরাজীবাড়ি) নতুন প্রজন্মের কাছে অপরিচিত থাকছে কেন? কেনই বা কবির এ স্মৃতি বিস্মৃত হচ্ছে। কবি নজরুল কোথা থেকে প্রথম উৎসাহ পেয়েছিলেন, কে তাঁকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন, কারা তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়েছিলেন, আর জাতীয় কবি সেই দরাজ দেলের মানুষটি সম্পর্কে কি বাণী উচ্চারণ করেছিলেন-সে কথাই উল্লেখ করতে চাই, এ লেখার মাধ্যমে।
[দিনের শুরুতেই যেমন সূর্যের আলো দিয়ে শুরু হয়, তেমনি বাঙালি জাতির সাহিত্যে, সংস্কৃতি, সার্বভৌমত্ব আর স্বাধিকার আন্দোলনের আলো জ্বেলে ছিলেন আমাদের জাতীয় কবি নজরুল। তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি যে, জ্বালা-যন্ত্রণা সহ্য করে নিজের জীবনকে পরিচালিত করেছেন সেই চরম দুঃখের যন্ত্রণাদায়ক দিনগুলোতে তিনি কিছুটা আনন্দও উপভোগ করেছিলেন, আদর, সম্মান ও আতিথেয়তা পেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন উৎসাহ, উদ্দীপনা আর পরম সান্নিধ্য। আর সে সকল বিষয়ে জানার জন্য আমরা রাজধানীর ব্যস্ত গ-ি পেরিয়ে একটু মফস্বল শহরের দিকে যেতে চাই। সে সময়ে মফস্বল শহর থেকে যে আলোর পথ দেখানো হয়েছিল, আজ সেই বাণীকুঞ্জ অন্ধকারে নিমজ্জিত। সারা বাংলা চোষে বেড়িয়ে কবি নজরুল শত দুঃখের মাঝে যে আনন্দ পেয়েছিলেন তাঁর সেই স্মৃতি চিহ্নের স্থানটির নাম সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের ‘বাণীকুঞ্জ’ (শিরাজীবাড়ী) সেদিনের সিরাজগঞ্জ বলতে লোক বুঝতো শিরাজী সাহেবের সাহিত্যে-সাধনা এবং কর্মজীবনের মূল কেন্দ্র বাণীকুঞ্জকে। ‘বাণীকুঞ্জ’ থেকে যে বাণী ধ্বনিত হয়ে উঠেছিল সেদিন। তা সেকালের বাঙালি মুসলমানদের কালঘুম ভাঙ্গিয়েছিল, মুক্তির পথের সন্ধান দিয়েছিল। তাই শিরাজীর ‘বাণীকুঞ্জ’ হয়ে উঠেছিল জ্ঞান-তীর্থ, ঘুমন্ত মুসলিমবঙ্গের নব-জীবন সংস্কারের উৎসাহ কেন্দ্র, ইসলামী জীবনবোধের নব রূপায়ন ক্ষেত্র। এ বাণীকুঞ্জ ছিল মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত কালজয়ী সিংহ পুরুষ অনল প্রবাহের কবি গাজী-এ-বলকান মরহুম মওলানা আবু মোহাম্মদ সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজীর জন্ম, কর্ম ও সমাধি ভূমি। আর জাতীয় কবি নজরুল তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্মান, আদর আর আতিথেয়তা এখান থেকেই পেয়েছিলেন। তাই তো কবি নজরুল কৃতজ্ঞতাচিত্তে বলেছিলেন, ‘শিরাজী ছিলেন আমার পিতৃতুল্য, তাঁর সমগ্র জীবন ছিল অনল-প্রবাহ। আমার রচনা সেই অগ্নিস্ফুলিঙ্গের প্রকাশ।’
জাতীয় কবি নজরুলের একথাগুলো বলার কারণ একটু অনুসন্ধান করি, ১৯৩২ সালে কবি নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ সফর করেন। ‘বঙ্গীয় মুসলিম তরুণ সম্মেলনে’ তিনি সভাপতিত্ব করবেন। তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়ে তাকে নিয়ে আসতে প্রস্তুত এ কমিটির সম্মানীত সভাপতি তুর্যনাদের অমর কবি সৈয়দ আসাদ উদ্দৌলা শিরাজী, কোলকাতা থেকে তিনি ট্রেনযোগে সিরাজগঞ্জ বাজার রেল স্টেশনে নামবেন। শহরের কিছু কাঠমোল্লা আক্রোশের কারণে কবিকে শহরে ঢুকতে দেবে না বলে তারা বেশ কিছু লোকবল নিয়ে বাধা প্রদানের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন এসে থামলো। সম্মেলন কমিটি তাদের সমর্থকদের নিয়ে কবিকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেবার জন্য স্টেশনে ভিড় জমিয়েছে। কেউ কেউ কবিকে এক নজর দেখবেন বলে এসেছেন। বাজার রেল স্টেশনে তাই হাজার হাজার লোকের সমাগম। সম্মেলন কমিটির লোকজন ‘নারায়ে তাকবির’ আল্লাহ-আকবর, কবি নজরুল জিন্দাবাদ ধ্বনিতে মুখরিত। কিন্তু কাঠমোল্লারা কোন কথাই শুনছেন না। শেষতক সম্মেলন কমিটির সভাপতি মাওলানা সৈয়দ আসাদ উদ্দৌলা শিরাজী বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে ‘মোনাজাত’ ধরলেন। এ সময় সকলে হাত তুলতে বাধ্য হলো। আসাদ শিরাজী মোনাজাতের মধ্যে নজরুলের স্বপক্ষে তার ভাল দিকগুলো তুলে ধরে প্রায় ১০/১৫ মিনিট কথা বললেন। ইসলাম ধর্মে ওজরের কথা বলা হয়েছে। অনেক সময় ওজরের জন্য অনেক কিছু যুক্ত যেমন করতে হয় তেমনি কিছু বাদ দিলেও ভুল হয় না। আজ মুসলমানদের চরম দুর্দিনে আমরা ফেতনা ফেসাদ নিয়ে ব্যস্ত হলে মুসলমানদের উন্নতি ঘটবে না। উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, কৃষকেরা জমি চাষ করতে করতে যে লাঙ্গলের ফালা ভোতা হয়ে যায়, তা ছুড়ে ফেলে না দিয়ে ঘরে যতেœ রেখে দেন কারণ শক্ত মাটি চাষ করার সময় এ ভোতা লাঙ্গলের ফালার বিশেষ প্রয়োজন হয়। আসাদ শিরাজীর এমন টেকনিক্যালী মোনাজাতের বক্তব্যে সবাই নিশ্চুপ বনে গেলেন। শুরু হলো পথ যাত্রা। কবিকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিতে সকলের হাতে ফুল দেয়া হয়েছে। সবাই কবির দিকে ফুল ছিটিয়ে দিচ্ছে। সারা শহরে যেন পুষ্প বৃষ্টি হচ্ছে। শহর পরিভ্রমণ করে কবিকে নিয়ে যাওয়া হবে যমুনা নদীর তীরঘেঁষা সুন্দর মনোরম ডাক বাংলোতে। সকলেই কবিকে এক নজর দেখার জন্য উদগ্রিব। ইতিমধ্যে কবি নজরুলের ঘোড়ার গাড়ি থামানোর জন্য খুব উচ্চস্বরে আফজাল মোক্তার গাড়োয়ানকে বলেছিলেন, গাড়ি থামাও। কবি বিস্ময় প্রকাশ করে বিরক্তির সুরে বলেছিলেন কি ব্যাপার, কি হয়েছে। তখন মোক্তার সাহেব কবির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, বাড়ির মেয়েরা কবিকে দেখার খুব ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন কবি মেহেরবাণী পূর্বক বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেই, মেয়েদের মনের আশা মিটে যায় না। এ কথা শুনে কবি নজরুল হেসেই আকুল। বলেছিলেন কি মুসকিল। এরপর তিনি উঠে দাঁড়ালেন বাড়ির মেয়েরা এক নজর তাকে দেখে নিলেন। কবি যখন যমুনা তীরে ডাক বাংলোতে অবস্থান করছিলেন। তখনও বেশ কিছু লোক তাঁর সঙ্গে দেখা করার তাগিদ দিচ্ছিলেন। এ সময় আসাদ শিরাজী সমবেত সুধীদের উদ্দেশ্যে বললেন, আপনারা যে কবির কথা শোনার জন্য আগ্রহ নিয়ে এসেছেন সেই কবি এখন ক্লান্ত। রেল ভ্রমণের কারণে তিনি শরীরে দুর্বলতা অনুভব করছেন। তিনি এখন বিশ্রাম নেবেন। আপনারা অনুগ্রহ পূর্বক সম্মেলনের স্থান ‘নাট্যভবন’ (বর্তমানে ভাসানী মিলনায়তন) অপেক্ষা করুন। কবির যা কিছু বলার প্রকাশ্যে অধিবেশনে বলবেন। কবির একনিষ্ঠ ভক্ত কালজয়ী গায়ক আব্বাস উদ্দীনের সঙ্গীত দিয়ে সভার কাজ শুরু হয়। সেই সাথে কবির ‘নারী’ কবিতা আবৃত্তি সকলের প্রশংসা কুড়ায়। অন্যান্যের মধ্যে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি কবি সৈয়দ আসাদ উদ্দৌলা শিরাজী, সৈয়দ আকবর আলী, ইজ্জত আলী, আফজাল মোক্তার, গিয়াস উদ্দিন, এরশাদ আলী প্রমুখ বক্তৃতা করেন। কবি তাঁর সভাপতির বক্তৃতায় বলেন, আজ সিরাজগঞ্জে আসিয়া সর্বপ্রথম অভাব অনুভব করিতেছি, আমাদের মহানুভব নেতা বাংলার তরুণ মুসলিমের সর্বপ্রথম অগ্রদূত, তারুণ্যের নিশান-বর্দান মাওলানা সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী সাহেবের। সিরাজগঞ্জের শিরাজীর সাথে বাংলার শিরাজ, বাংলা প্রদীপ নিভিয়া গিয়াছে। যাহার ‘অনল-প্রবাহ’ সম বাণীর গৈরিকনিঃস্রাব জ্বালাময়ী ধারা মেঘ-নিরক্ষ গণনে অপরিমাণ জ্যোতি সঞ্চায় করিয়াছিল, নিদ্রাতুরা বঙ্গদেশ উন্মাদ আবেগ লইয়া মাতিয়া উঠিয়াছিল-‘অনল-প্রবাহে’র সেই অমর কবির কণ্ঠস্বর বাণীকুঞ্জে আর শুনিতে পাইব না। বেহেশতের বুলবুলি বেহেশতে উড়িয়া গিয়াছে। জাতির, কওমের, দেশের যে মহাক্ষতি হইয়াছে-আমি শুধু তাহার কথাই বলিতেছি না, আমি বলিতেছি আমার একার বেদনার ক্ষতির কাহিনী। আমি তখন প্রথম কাব্য-কাননে ভয়ে ভয়ে পা টিপিয়া প্রবেশ করিয়াছি-ফিঙে বায়স বাজপাখির ভয়ে ভীরু পাখির মত কণ্ঠ ছাড়িয়া গাহিবারও দুঃসাহস সঞ্চয় করিতে পারি নাই, নখ-চঞ্চুর আঘাতও যে না খাইয়াছি এমন নয়-এমনি ভীতির দুর্দিনে মানিঅর্ডারে আমার নামে দশটি টাকা আসিয়া হাজির। কুপনে শিরাজী সাহেবের হাতে লেখা-‘তোমার লেখা পড়িয়া সুখী হইয়া দশটি টাকা পাঠাইলাম। ফিরাইয়া দিও না ব্যথা পাইব। আমার থাকিলে দশ হাজার টাকা পাঠাইতাম।’ চোখের জালে স্নেহ-সুধাসিক্ত ঐ পঙক্তি লেখা বারে বারে পড়িলাম, টাকা দশটি লইয়া মাথায় ঠেকাইলাম। তখনো আমি তাহাকে দেখি নাই। কাঙাল ভক্তের মত দূর হাতেই তাঁহার লেখা পড়িয়াছি, মুখস্থ করিয়াছি, শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়াছি। সেই দিন প্রথম মানস-নেত্রে কবির স্নেহ-উজ্জ্বল মূর্তি মনে মনে রচনা করিলাম, গলায় পায়ে ফুলের মালা পরাইলাম। তাহার পর ফরিদপুর ‘বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সে’ তাঁহার জ্যোতির্বিম-িত মূর্তি দেখিলাম। দুই হাতে তাঁহার পায়ের তলার ধূলি কুড়াইয়া মাথায় মুখে মাখিলাম। তিনি আমায় একেবারের বুকের ভিতর টানিয়া লইলেন, নিজ হাতে করিয়া মিষ্টি খাওয়াইয়া দিতে লাগিলেন। যেন বহুকাল পরে পিতা তাহার হারানো পুত্রকে ফিরাইয়া পাইয়াছেন। আজ সিরাজগঞ্জে আসিয়া বাংলার সেই অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, মনস্বী দেশপ্রেমিকের কথাই বারে বারে মনে হইতেছে। এ যেন হজ করিতে আসিয়া কাবা শরীফ না দেখিয়া ফিরিয়া যাওয়া। তাঁহার রুহ মোবারক হয়তো আজ এই সভায় আমাদের ঘিরিয়া রহিয়াছে। তাঁহারই প্রেরণায় হয়তো আজ আমরা তরুণেরা এই যৌবনের আরাফাত ময়দানে আসিয়া মিলিত হইয়াছি। আজ তাঁহার উদ্দেশ্যে আমার অন্তরের অন্তরতম প্রদেশ হইতে শ্রদ্ধা-তসলিম নিবেদন করিতেছি, তাঁহার দোয়ায় ভিক্ষা করিতেছি।
কবি তার বিস্তৃত বক্তৃতায় আরও বলেন সিরাজগঞ্জবাসী আমাকে যে, অভিনন্দন ও অভ্যর্থনা জানিয়েছে তার ভারে আমার মাথা নত হয়ে গেছে। আমি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ রইলাম। তিনি বলেন, আমি উপদেশের শীলাবৃষ্টি করতে আসিনি। প্রয়োজনের অনুরোধে যা না বললেই নয়, আমি সে টুকুই বলবো। দেশের জাতির ঘনঘোর ঘেরা দুর্দিনে জাতির শক্তি মজ্জাপ্রাণ স্বরূপ তরুণদের পথের দিশারী হবার স্পর্ধা বা যোগ্যতা আমার কোনদিন ছিল না, আজও নেই। আমি দেশ কর্মী, দেশ নেতা নই। যদিও দেশের প্রতি আমার মমত্ববোধ কোন স্বদেশ প্রেমিকের অপেক্ষা কম নয়। আমি যৌবনের কবি বলেই যদি আপনারা আমাকে আপনাদের গলার মধ্যমনি করে থাকেন তাহলে আমার অভিযোগ করার কিছুই নেই। কবি এ সময় অসংখ্যক শ্লোক আর উদাহরণ টেনে এনে সিরাজগঞ্জবাসীর ভালোবাসার চোখের পানি বের করে আনতে সক্ষম হন। কবির মর্মস্পর্শী কথার প্রতিটি শব্দই যেন সম্মেলনকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল। তাঁর বক্তৃতার মাঝে মাঝে এমন কিছু কথা বা শব্দ তিনি উচ্চারণ করেছিলেন যার মর্মকথা বোঝা অনেকের জন্য কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছিল। কবির অগ্নিগর্ভ বক্তৃতা এখনও সিরাজগঞ্জবাসীর মনে গাঁথা রয়েছে। এরপর কবি মুসলিম রেনেসাঁর অগ্রদূত, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা, দেশবরেণ্য নেতা গাজী সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী কর্ম, কর্ম ও সমাধি ভূমি বাণীকুঞ্জ (শিরাজী বাড়িতে) আসেন। গাজী ইসমাইল হোসেন শিরাজী জ্যেষ্ঠপুত্র সৈয়দ আসাদ উদ্দৌলা শিরাজী তাঁকে আতর দিয়ে বরণ করে নিলেন। শিরাজী বাড়ির আদর, সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বড় আকারের ছানার সন্দেশ, কুমড়া ও বেলের মোরব্বা ও নারকেলের চিড়া দিয়ে আপ্যায়ন শেষে কবি গাজী শিরাজীর সমাধি পার্শ্বে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। ঠিক ঐ সময়েই বেদনাসিক্ত কণ্ঠে কবি নজরুল বললেন, অনল প্রবাহের কবি আমাকে যে সম্মান দেখিয়েছে, যে আদর করেছে এটা ছিল আমার শ্রেষ্ঠতম পাওয়া। সারা বাঙালায় এমন আদর আমি কোথাও পাইনি। তিনি শিরাজীর মাজার পার্শ্বে দাঁড়িয়ে দু’হাত তুলে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেন। এরপর কবি নজরুল শিরাজী পরিবারের লাইব্রেরী, খানকা শরীফ ঘুরে ঘুরে দেখেন। শিরাজী পরিবারের সকলের সঙ্গে পরিচিত হন।