কোহিনূর ফেরত চেয়ে লন্ডন হাইকোটে মামলা
একসময় ওই হিরেও ছিল ভারতের গর্ব। তখন অবশ্য ভারত ছিল ভারতবর্ষ। এদেশের বিপুল সম্পদের মধ্যে সবচেয়ে চর্চিত। তারপর একের পর এক বিদেশি শক্তির হানা। পৃথিবীর উজ্জ্বলতম হিরে কোহিনূর এ হাত সে হাত ঘুরে বর্তমানে ব্রিটেনে। ভারতের অনেক সম্পদের সঙ্গে কোহিনুর হিরেটিও লুঠ করে নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ শাসক। এবার ফেরত দেয়ার পালা। কোহিনুর হিরে ফিরে পেতে লন্ডন হাইকোর্টে মামলা করতে চলেছে ভারত।
১০৫ ক্যারেটের কোহিনুর দেশে ফেরাতে এবার একজোট হলেন বলিউডের তারকা ও শিল্পপতিরা। লন্ডন হাইকোর্টে মামলা ঠুকতে ইতোমধ্যেই যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলেছেন তারা। মামলা জিততে পারলেই ব্রিটেনকে কোহিনুর ফিরিয়ে দিতে হবে ভারতকে। ১৯০ বছরের শাসনের সময় ভারতের সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐশ্বর্যের গর্ব কোহিনুর লুঠ করে নিয়ে যায় ব্রিটিশরা। কয়েকশো বছর আগে অন্ধ্রপ্রদেশের কল্লুর খনি থেকে যখন হিরেটি পাওয়া গিয়েছিল তখন তা ছিল ৭৯৩ ক্যারেটের বিশাল একটি হিরে। তারপর হিরেটি কাটিং করে ছোট করা হয়। বর্তমানে তা ১০৫.৬ ক্যারেটের। বাজারদর ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড। ১৮৫১ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ওই হিরে ভারত থেকে নিয়ে গিয়ে তত্কালীন ‘ইংলন্ডেশ্বরী’ ভিক্টোরিয়াকে উপহার দেয়। তারপর থেকেই তা রাজপরিবারের সম্পত্তি হয়ে যায়। বর্তমানে ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের মুকুটে জ্বলজ্বল করে।
বলিউড তারকা ও শিল্পপতিদের দাবি, ওই হিরে ভারতের সম্পত্তি। চুরি করে নিয়ে গিয়েছে ব্রিটেন। ফেরত দিতেই হবে। লন্ডন হাইকোর্টে দায়ের করা হচ্ছে মামলা। ভারতীয় ব্যবসায়ী ও মামলাকারী পক্ষের সদস্য ডেভিড ডি সুজার কথায়, ‘ভারতের বহু শিল্পকর্ম ও ঐশিবর্যের সঙ্গেই চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় কোহিনুর।’ বলিউড অভিনেত্রী ভূমিকা সিং-এরও বক্তব্য, ‘কোহিনূর শুধুই একটি ১০৫ ক্যারেটের হিরে নয়। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যেরও একটি অংশ। আমাদের ঐতিহ্য ফেরত দিতেই হবে।’
বলিউড স্টার ও শিল্পপতিদের এই জোটবদ্ধ মামলা অস্বস্তি বাড়াতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কারণ চলতি সপ্তাহেই মোদিকে বাকিংহাম প্যালেসে নিমন্ত্রণ করছেন রানি এলিজাবেথ। যদিও ব্রিটেনের রাজপরিবারের অফিস সূত্রের খবর, মোদি-এলিজাবেথ বৈঠকে কোহিনূর প্রসঙ্গকে রাখা হয়নি।