মসজিদ : আত্মসমর্পিতের প্রাণের স্পন্দন
“মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিয়ো ভাই,
যেন গোরে থেকেও মুয়ায্যিনের
আযান শুনতে পাই…।”
-কাজী নজরুল ইসলাম
মসজিদের মিনার ফুঁড়ে দিনে ৫ বার আমরা শুনি হৃদয়কাড়া আযানের মধুর ধ্বনি। আসুন মসজিদ সম্পর্কে কিছু কথা আজ জেনে নেই।
মসজিদ শব্দটি আরবি। উচ্চারণ : সধবংফুরফ অভিধানিক অর্থ- শ্রদ্ধাভরে মাথা অবনত করা অর্থাৎ সিজদাহ করা।
সাধারণভাবে- যেসব ইমারত বা স্থাপনায় মুসলমানেরা একত্র হয়ে প্রাত্যহিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন, তাকে মসজিদ বলে।
জামে মসজিদ: যেসব বড় আকারের মসজিদগুলো নিয়মিত নামাজের সাথে সাথে শুক্রবারের জুম’আর নামাজ আদায় হয় এবং অন্যান্য ইসলামিক কার্যাবলী (যেমন- কুরআন শিক্ষা দেয়া) সম্পাদিত হয়, সেগুলো জামে মসজিদ নামে অভিহিত।
** মসজিদসমূহ আবাদকারিগণ সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত : পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন-
“তারাই তো আল্লাহ্র মসজিদ আবাদ করে, যারা ঈমান আনে, আল্লাহ ও আখেরাতে এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকেও ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। (তাওবা-১৮)
** নিয়মিত মসজিদে নামায আদায়কারীগণ আল্লাহর প্রতিবেশী : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন নিশ্চয়ই সুমহান আল্লাহ্ উচ্চস্বরে আহ্বান করতে থাকবেন, “আমার প্রতিবেশী কোথায়!” “আমার প্রতিবেশী কোথায়!” ফেরেশতাগণ তখন নিবেদন জানাবেন- “হে আমাদের প্রতিপালক! কার পক্ষে আপনার প্রতিবেশী হওয়া সম্ভব?” তিনি তখন বলবেন, “মসজিদসমূহ আবাদকারিগণ কোথায়?”
এ হাদীসটি ইবনুন- নাজ্জার হযরত আনাস (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
** আল্লাহর নিকট পৃথিবীর সর্বোত্তম স্থান হলো মসজিদ: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : “আল্লাহ্র নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় স্থান হচ্ছে মসজিদগ সমূহ। আর তার নিকট সব চেয়ে অপছন্দনীয় স্থান হচ্ছে বাজার সমূহ।” (সহীহ্ মুসলিম)
** মসজিদে প্রবেশের দু’আ: উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক…
হে আল্লাহ্! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা খুলে দিন। (ইবনে মাজাহ)
** মসজিদ থেকে বের হওয়ার দু’আ: উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী আসয়ালুকা মিন ফাদলিক।
হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। (তিরমিযী)।
মুসলিম আর মসজিদ যেন একই সুতোয় গাঁথা মালা। ঢাকাকে যখন “মসজিদের শহর” বলে পরিচয় দেওয়া হয় তখন একজন মুসলিম হিসাবে কতটা গর্ব হয় সেটা শুধু অনুভবের বিষয়। আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পিত একজন মুসলিম ব্যাকুল হৃদয়ে প্রতিদিন ছুটে চলেন মসজিদ পানে। মিনারের সুরের টানে মসজিদে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমেই তিনি অনুভব করেন পরম প্রিয় মহামহিম সত্তাকে। তার ভালবাসায় উজাড় করে দেন নিজেকে। খুঁজে নেন অশান্ত হৃদয়ে অনাবিল প্রশান্তি। -সুমাইয়্যা