বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীতে ঠাসা দেশের ৬৮ কারাগার
ঢাকাসহ সারাদেশের ৬৮ কারাগার এখন বিএনপি-জামায়াতের বন্দি নেতাকর্মীতেই ঠাসা। এদের অধিকাংশকেই কয়েকদিন আগে শুরু হওয়া বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিরা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন-পরবর্তী নাশকতাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি। এ ছাড়া চলমান অভিযানে প্রতিদিনই তাদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় ৭৮৪ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে যার অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াতের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা।
কারাগারের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৬৮ কারাগারে মোট বন্দির মধ্যে শুধু বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীই এখন এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। এ ছাড়া এ দুটি রাজনৈতিক সংগঠনের প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের বিপুলসংখ্যক আত্মীয়স্বজনকেও গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সবমিলিয়ে অধিকাংশ জেলখানা এখন বিএনপি-জামায়াতের ‘ঘরবাড়ি’ হয়ে উঠেছে।
বিষয়টি স্বীকার করে কারা কর্তৃপক্ষের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ কারাগারের প্রতিটি সেলেই বিএনপি-জামায়াতের দু-চারজন নেতাকর্মী রয়েছে। কোনো কোনো সেলে শুধু তারাই এককভাবে অবস্থান করছে। অথচ একই দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীদের একই সেলে রাখার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কারা কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি এখন এতটাই বেহাল যে, সব জেনেশুনেও এখন তাদের ওইসব নির্দেশনা উপেক্ষা করতে হচ্ছে। যেভাবে ধরপাকড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে তাতে আগামীতে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠবে তা নিয়েও তিনি আতঙ্ক প্রকাশ করেন।
জামায়াতের প্রথম সারির একজন নেতা জানান, তাদের ৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী এখন কারাবন্দি। এদের একটি বড় অংশকে সম্প্রতি সময়ের চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের পুলিশ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া দলের নেতাকর্মীদের বিপুলসংখ্যক আত্মীয়-স্বজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত কয়েকদিনের অভিযানে আটক ব্যক্তি জামায়াতের সমর্থক হলেও তাকে ছাড়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ওই নেতা।
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলেন, ‘বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ সক্রিয় নেতাকর্মীরই এখন কারাগারে ঠাঁই মিলেছে। আর যারা আত্মগোপনে রয়েছেন, তারাও জেলে যাওয়ার জন্য গাট্টি-বোচকা গুছিয়ে রেখেছেন।’
দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, ৫-৭ দিনে তাদের ৩ সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। এর আগে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে আরো প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী হাজতবাস করছেন। সব মিলিয়ে ৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। –যায়যায়দিন