শরণার্থীদের আফ্রিকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত ইউরোপের
ইউরোপে প্রবেশ করা লাখ লাখ শরণার্থীকে আফ্রিকায় পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আর এজন্য তারা হাজারও আফ্রিকান শিক্ষার্থী, ডাক্তার ও অন্য পেশাজীবীদের ইউরোপে পড়াশোনা ও বসবাসের সুযোগ দেবে। এছাড়া আফ্রিকাকে অর্থ সহায়তাও দেবে তারা।
গত কয়েক মাস ধরেই অভিবাসী নিয়ে মানবিক সংকটে ইউরোপের দেশগুলো। এই সংকট কাটিয়ে উঠতেই ইউরোপের মন্ত্রীরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে জানানো হয়, যারা সমাজে অবদান রাখতে পারবে শুধু তাদেরই আশ্রয় দেবে তারা। এদিকে ইইউর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ডোনার্ড টাস্ককে চিঠি পাঠাতে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তার ঠিক আগেই এমন সিদ্ধান্ত এলো ইইউর পক্ষ থেকে।
তবে তাদের এই সিদ্ধান্তকে পাগলামি বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, এমন সিদ্ধান্তে ব্রিটিশ নাগরিকরা ইইউ ছাড়ার জন্য ভোট দিতে পারেন।
ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডেভিড ক্যামেরন। এজন্য আগামী মঙ্গলবার একটি বক্তব্য দেয়ার কথা রয়েছে তার। তবে ব্রিটেনের আহ্বান না মানা হলে ইইউ ত্যাগ করারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। তবে ক্যামেরনের মন্ত্রিসভার কয়েক সদস্য টেলিগ্রাফকে জানান, ইইউয়ে যুক্তরাজ্যের সদস্যপদে পরিবর্তন আসতে পারে। এছাড়া বুধবার মাল্টার ভ্যালেটায় অভিবাস সংকট নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে ইইউর গাঠনিক পরিবর্তনে চাপ প্রয়োগ করার কথাও আছে ডেভিড ক্যামেরনের।
তবে এর আগে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, শরণার্থী সংকট নিয়ে নতুন এই সমাধানটিকে তিনি সমর্থন করবেন কিনা। এরই মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা।
ফাঁস হওয়া এক নথির বরাতে দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, আফ্রিকার শুধু এলিট শ্রেণীকেই ভাষা শিক্ষাসহ ইউরোপে ভিসার অনুমতি দেয়া হবে। এর মাধ্যমে আসলে আফ্রিকান নেতাদের সামনে মুলা ঝোলানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনটিতে।
এই পরিকল্পনার আওতায় ইথিওপিয়া, সুদান, উগান্ডা এবং কেনিয়াসহ অন্য আফ্রিকান দেশগুলোতে ১.৩ বিলিয়ন পাউন্ড সহায়তাও দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ইইউ। এছাড়া অভিবাসীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিরও আহ্বান জানায় তারা।
কমন্স ইউরোপিয়ান স্ক্রুটিনি কমিটির চেয়ারম্যান স্যার বিল ক্যাশ বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অভিবাসন সংকট কিছুটা হলেও লাঘব করা যাবে। আমি আগেই বলেছিলাম, মানুষের জনস্রোত আসবে, এখন শোনা যাচ্ছে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ইউরোপে আসছেন। আমাদের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
এদিকে, এই পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব রাখবে না।