ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মিসরের শার্ম আল শেখ
লোহিত সাগরের পাড়ে চমৎকার সমুদ্র তট, পেছনে রুক্ষ পাহাড়ের সারি সব মিলিয়ে এক মোহনীয় সুন্দর জায়গা মিসরের অবকাশ কেন্দ্র শার্ম আল শেখ। চারিদিকে ক্যাফে, বীচ ক্লাব, হোটেল দেখে বোঝা যায় এটা পর্যটকদের জন্যই গড়ে তোলা জায়গা। তবে এই জায়গায় এখন পর্যটকদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
মিসরের সিনাইতে রুশ পর্যটকবাহী এক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২২৪ জন আরোহী নিহত হওয়ার পর দেশটির পর্যটন শিল্প এখন বড় সংকটে।
কারিগরি ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল নাকি মধ্য আকাশে বোমা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে তদন্তকারীরা সেই প্রশ্নের মীমাংসা এখনো করতে পারেনি।
কিন্তু এটি একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা ছিল, এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পর্যটকদের মিসরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে অনেক দেশ। আর তার প্রভাব পড়ছে এই শার্ম আল শেখেও।
আহমেদ দাউইশ শার্ম আল শেখের একটি বীচ ক্লাব চালান। কিন্তু তিনি এখন শঙ্কায় আছেন। সন্ত্রাসবাদী হামলাতেই রুশ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, এমন সন্দেহের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তার ব্যবসায়। পর্যটক আসায় ভাটা পড়েছে, অনেকেই ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এর মধ্যেই মিসর থেকে হাজার হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে ব্রিটেন আর রাশিয়া।
আহমেদ দাউইশ বলছেন, যদি এ অবস্থা আরো ২ মাসের বেশি চলে, আমাদের কিন্তু অনেক লোক কমাতে হবে। অন্তত ৫০ ভাগ কর্মী ছাঁটাই করতে হবে। কারণ পর্যটকের সংখ্যা আশিভাগ কমে গেছে। এ অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে এ ছাড়া আমাদের উপায় নেই।
উইন্ড বীচে পর্যটকদের জন্য চলছে উদ্দাম পার্টি। কিন্তু সাগর তীরে রোদ পোহানোর জন্য সাজিয়ে রাখা খাটগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। সংকটটা কতো বড়, এ থেকেই বোঝা যায়। বছরের এ সময়টাই এখানে পর্যটকে গিজ গিজ করার কথা, কিন্তু সাগরতীরের শূন্যতা ভরাচ্ছে কেবল সঙ্গীত।
তবে অনেকে আশাবাদী, এক সময় তারা এই সংকট আবার কাটিয়ে উঠতে পারবেন। একটি বীচ ক্লাবের মালিক আদলি আসমাতাকাউই মনে করেন, তারা এবারও এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
তিনি বলছেন, আমি মোটেই চিন্তিত নই। এর আগেও এরকম সংকটের ভেতর দিয়ে আমরা গেছি। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ২০০৫ সালের সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় এবং আরব বসন্তের বিপ্লবের সময়। তখন তো রাস্তায় পুলিশ পর্যন্ত ছিল না। তার মধ্যেও তো আমরা বেঁচে আছি।
আকাশে উড়ে যাওয়া প্রতিটি বিমানে করে এখন পর্যটকরা দলে দলে মিসর ছাড়ছে। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না দেয়া পর্যন্ত এদের যে ফিরিয়ে আনা যাবে না, সেটা এখন মিসরের সরকারও বুঝতে পারছে।