মুসলিমবিদ্বেষীদের ঘৃণাভরা একেকটি বার্তার জন্য এক ডলার দান
সুসান কারল্যান্ড (৩৪)। অধ্যাপক, পাশাপাশি সমাজকর্মী। সম্প্রতি মেলবোর্নের মোনাশ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ‘মুসলিম অব দ্য ইয়ার’ এর খেতাবও জিতেছেন তিনি।
সুসানের স্বামী ওয়ালিদ আলী (৩৫)। তিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনের একাধিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করে থাকেন। সম্প্রতি তিনি ‘মিডিয়া পারসোনালিটি অব দ্যা ইয়ার’ খেতাব জিতেছেন।
এই প্রতিভাধর দম্পতির বসবাস অস্ট্রেলিয়ায়। দুই সন্তানের মা-বাবা তারা। মিডিয়ার সুপরিচিত মুখ। ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাধর মুসলিম দম্পতি’ হিসেবে পরিচিত তারা।
অস্ট্রেলিয়ায় মুসলমানদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন সুসান। আর তাই কটু কথা শুনতে হয় তাকে। টুইটারে প্রতিদিনই তাকে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী, মুর্খ, নির্বোধ।’
প্রতিভাধর এই নারী যে অন্য যে কারো থেকে আলাদা তার প্রমাণ দিলেন আরো একবার। ঘৃণার বদলে ‘ভালোবাসার বার্তা’ দিলেন।
ঘৃণাভরা শব্দের জবাবে তিনি কিন্তু পাল্টা ঘৃণা ছড়াননি। তাদের মুখ বন্ধও করতে বলেননি। তবে জবাব দিয়েছেন, বলা যায় ‘সমুচিত জবাব-ই’ দিয়েছেন।
ওই সব মুসলিমবিদ্বেষীদের বাজে কথার জবাবে ইউনিসেফে দান করছেন তিনি। সহজ করে বললে, একেকটি ‘ঘৃণাভরা বার্তা’র জন্য ইউনিসেফে এক ডলার করে দান করছেন তিনি। ইতোমধ্যে এক হাজার ডলার দান করে ফেলেছেন।
তিনি টুইটারে বলেছেন, “আমি তোমাদের কাছ থেকে পাওয়া একেকটি ‘ঘৃণাভরা টুইটের’র জন্য ইউনিসেফে এক ডলার করে দান করছি। এ পর্যন্ত এক হাজার ডলার দান করেছি। এর জন্য অভাবগ্রস্ত শিশুগুলো তোমাদের ধন্যবাদ দিয়েছে!”
গত মঙ্গলবার তার স্বামী ওয়ালিদ আলী জি কিউ অস্ট্রেলিয়া ম্যান অব দ্যা ইয়ার অ্যাওয়ার্ডসের পক্ষ থেকে ‘মিডিয়া পারসোনালিটি অব দ্যা ইয়ার’ পুরস্কার পেয়েছেন। এই সময় স্বামীর পাশেই ছিলেন সুসান।
এরপর থেকেই আক্রমণাত্মক ও আপত্তিকর বার্তা পাচ্ছেন সুসান। তাকে বলা হচ্ছে, ‘সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি দরদী এবং নির্বোধ।’
আরেকজন বলেছেন, ‘তোমার মস্তিস্ক পোকার মতো।’ কেউ কেউ তো নির্বোধ পর্যন্ত বলেছেন একজন মুসলিমকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করায়।
তবে এবারই প্রথম নয়, ১৯ বছর বয়সে তিনি যখন খ্রিস্টান থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তখন থেকেই এ ধরণের কটুক্তি শুনে আসছেন তিনি।
সুসান এইসবকে কখনো পাত্তা দেননি। অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। সুবক্তা হিসেবে তার খ্যাতিও রয়েছে।