নতুন জীবনের আশার আলো দেখছে রোহিঙ্গারা
মিয়ানমারে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম ঐতিহাসিক অবাধ সাধারণ নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে গণতন্ত্রের নেত্রী অং সান সু চি’র দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) জয়ে সামান্য হলেও নতুন জীবনের আশার আলো দেখছে নিপীড়িত রোহিঙ্গারা।
মিয়ানমারে বর্তমান সরকারের আমলে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা। ভোট দিতে পারলে অনেক রোহিঙ্গা ভোটারই হয়ত সু চিকেই বেছে নিত। কিন্তু ঐতিহাসিক এ নির্বাচনে অংশগ্রহণই করতে পারেনি তারা। এখন নির্বাচনে বিপুল ভোটে এনএলডি’র জয়ের পর এইসব ভাগ্যবিড়ম্বিত রোহিঙ্গদের আশা, সু চি’র নেতৃত্বাধীন সরকার তাদের নতুন জীবনের সূচনা ঘটাবে, ফিরিয়ে দেবে হারানো অনেক অধিকার । নূর বেগম নামের ২৮ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গার উক্তি, “আশা করি অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে।” ২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে বৌদ্ধ-মুসলিম সহিংসতায় তছনছ হয়ে গিয়েছিল নূর বেগমের গ্রাম। বর্তমান সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা নেয়ার পর সু চির জন্য নানা ইস্যুর মধ্যে বিতর্কিত রোহিঙ্গা সমস্যা সামাল দেয়াটাই তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
রোহিঙ্গাদের দুর্দশা এবং নিপীড়নের শিকার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তেমন সোচ্চার না হওয়া এবং উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা না রাখার জন্য সু চি এরই মধ্যে পশ্চিমাদের পাশাপাশি মিয়ানমারেও অনেকের সমালোচনার শিকার হয়েছেন। আগামী মার্চে এনএলডি সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর সু চি রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপে পড়বেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পক্ষ হয়ে বেশি কথা বলতে গেলে দেশে রাজনৈতিকভাবে চরম মূল্য দিতে হতে পারে সুচিকে। কারণ, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক হিসাবেই গণ্য নয়। তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসাবে দেখা হয়।
সুচির দলেরও অনেকেই রোহিঙ্গাদেরকে এ চোখে দেখে। ফলে রোহিঙ্গাদের পক্ষ নিলে সুচি জনসমর্থন হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন।