সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে একসঙ্গে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। জল্লাদ শাহজাহান ও রাজু এ দুজনের ফাঁসি কার্যকর করে। এর আগে তাদের তওবা পাঠ করান কারা মসজিদের পেশ ইমাম মনির হোসেন।
ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন- আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, এডিশনাল আইজি প্রিজন, জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, সিনিয়র জেল সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলার, সিভিল সার্জন, কারা চিকিৎসক, ডিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি, লালবাগ জোনের ডিসি ও র‌্যাবের প্রতিনিধি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে চট্টগ্রামের রাউজানে পারিবারিক কবরস্থানে আর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদকে নিজ জেলা ফরিদপুর শহরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন।
মূলত রাষ্ট্রপতির কাছে সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পরপরই ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। ফাঁসি কার্যকরের আগে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পরিবারের সদস্যরা।
এরপর কারাগারে শুরু হয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি। শেষ দেখা করতে রাত ৯টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী-ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা কারাফটকে পৌঁছান। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে যান মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরাও।
এ উপলক্ষে কারাগারের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এ নিয়ে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তৃতীয় ও চতুর্থ ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর হলো। এর আগে জামায়াতে ইসলামীর দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তবে দুজনের কেউই প্রাণভিক্ষার আবেদন করেননি।
বুধবার যখন আপিল বিভাগ তাদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয় তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর শুধুই সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারাকর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট দফতর তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নেয়।
বৃহস্পতিবার রাতে রিভিউ খারিজের রায় গিয়ে পৌঁছায় কারাগারে। এরপরই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাইবেন কি-না সে প্রশ্ন সামনে আসে।
এ দুইজনের মৃত্যুদন্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।