আর চলবে না হাতে লেখা পাসপোর্ট

Passportআজ মঙ্গলবারের পর থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে আর আগের হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে না, যদিও বিদেশে থাকেন এমন কয়েক লক্ষ বাংলাদেশী নাগরিক এখনো মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট পাননি।
তবে কর্মকর্তাদের ধারণা, বিষয়টি নিয়ে বড় ধরণের সংকট হবে না। কর্মকর্তারা বলেছেন, যেসব বাংলাদেশী নাগরিক এখনো যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বা মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট পাননি, তাদের জরুরি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভ্রমণ পাস দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বরের পর আর হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে না, এই সময়সীমা ঠিক করা হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগেই।
নতুন মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট দেয়ার জন্যে বিদেশী কোম্পানি নিয়োগ করা হলেও অনেক বাংলাদেশী এখনো এ ধরনের পাসপোর্ট হাতে পাননি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ বা আটাবের সভাপতি মনজুর মোরশেদ বলছেন, অনেকে এখনো জানে না যে হাতে লেখা পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে ।
তিনি বলেন, “এই সমস্যাটা সবচে বেশি প্রবাসী বাংলাদেশীদের। তারপরে যারা গ্রামে-গঞ্জের মানুষ, খুব বেশী ভ্রমণ করেন না। তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত নন।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সংসদে জানিয়েছেন, এখনো ১১ লক্ষ বাংলাদেশী মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট পাননি।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের হিসেবে এই সংখ্যা অবশ্য অনেক কম, যদিও অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ধারণা, বিদেশে অবৈধভাবে বাস করছেন এমন অনেক বাংলাদেশী তাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য দূতাবাসে সময় মতো জানান না, ফলে এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান পুরোপুরি সঠিক হয় না। এন এম জিয়াউল আলম অবশ্য বলছেন, এরই মধ্যে সোয়া এক কোটি বাংলাদেশীকে নতুন পাসপোর্ট দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্বেগ হলো, যারা এখনো হাতে লেখা পাসপোর্ট নিয়ে আছেন, তাদের পাসপোর্ট পরিবর্তন করে মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট দেয়া নিয়ে। ২০১২-১৩ সালের দিকে সৌদি আরব ও আমিরাতে হাতে লেখা কিছু পাসপোর্ট দেয়া হয়েছে, যেগুলোর মেয়াদ ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশী তাদের পাসপোর্ট পরিবর্তন করে নিতে পেরেছেন। এদের সংখ্যা হবে আড়াই লক্ষের মতো।”
প্রবাসী বাংলাদেশীরা সবচেয়ে বেশী সংখ্যায় বাস করেন সৌদি আরবে। সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্‌ অবশ্য যে পরিসংখ্যান দিচ্ছেন, তাতে এটা পরিষ্কার যে বিরাট সংখ্যক বাংলাদেশী এখনো মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট পাননি।
তিনি বলছেন, ১৩ লক্ষের বেশী বাংলাদেশীর মধ্যে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ নতুন পাসপোর্ট পাননি।
তিনি বলেন, “আমাদের ক্যাপাসিটি প্রতিদিন আড়াই হাজার। কিন্তু চারশো থেকে পাঁচশো প্রতিদিন নিবন্ধন করা হচ্ছে। যদি জরুরি প্রয়োজন হয়, তবে ট্রাভেল পাস দেয়া যায়। এক্ষেত্রেও জরুরি প্রয়োজনে আমরা ট্রাভেল পাস দেবো।”
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলছেন, মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত কোন বিদেশী দূতাবাস ভিসা দিচ্ছে না, ফলে কেউ যেতে পারবেন না। তবে দেশে ফিরতে কোন অসুবিধা হবে না।
তিনি বলেন, “যাদের হাতে লেখা পাসপোর্ট রয়েছে, তাঁরা বিদেশ থেকে সহজে দেশে আসতে পারবেন। আর দেশে এসে তাঁরা তাদের পাসপোর্ট পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। অর্থাৎ এই কার্যক্রম চলবে, এটা বন্ধ থাকবে না।”
জিয়াউল আলম আরো বলেন, বাংলাদেশ যে এখনো সবাইকে মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট দিতে পারেনি, তা আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। -বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button