বিচারের মুখে ক্রিস্টিন লাগার্দ
বড় অঙ্কের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দকে।
বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালে বার্নার্ড তাপি নামে এক ব্যবসায়ীকে ৪০ কোটি ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার অভিযোগে তাকে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ফ্রান্সের বিচারিক আদালত।
তবে বিচারিক আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য লাগার্দ পাঁচ দিন সময় পাবেন।
২০০৭ সালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলা সারকোজিকে সমর্থন দেওয়া বার্নার্ড তাপি এক সময় জনপ্রিয় ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাসের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক ছিলেন। আংশিকভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক ক্রেডিট লিওনয়ের মধ্যস্থতায় ১৯৯৩ সালে নিজের কাছে থাকা অ্যাডিডাসের সব শেয়ার বিক্রি করে দেন তাপি।
ক্রেডিট লিওনয় মূলত অ্যাডিডাসের মূল্য নির্ধারণ করেছিল। আর এক্ষেত্রে কোম্পানিটির দাম কমিয়ে ধরা হয়েছিল দাবি করে পরবর্তী সময়ে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে মামলা করেন তাপি।
সে সময় তাপি দাবি করেন, যেহেতু ব্যাংকটির প্রধান শেয়ারহোল্ডার রাষ্ট্র, তাই রাষ্ট্রকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য সে সময় লাগার্দ তিন সদস্যের একটি সালিসি প্যানেলে পাঠান। সেই প্যানেল ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে রায় দিলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাপিকে ৪০ কোটি ইউরো দেওয়া হয়।
তবে এখন অভিযোগ উঠেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজিকে ২০০৭ সালের নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ায় তাপিকে এ অর্থ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার আদালতের আদেশের পর ক্রিস্টিন লাগার্দের আইনজীবী ভেস রেপিকুয়েত দেশটির একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এটি অচিন্তনীয়’। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে আমি ক্রিস্টিন লাগার্দকে পরামর্শ দেব।’
এদিকে আইএমএফের মুখপাত্র জেরি রাইস জানান, ‘অর্পিত দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালনে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সামর্থ্যের ওপর তাদের আস্থা রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।’
ফ্রান্সের অ্যাটর্নি জেনারেলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আদালতের আদেশ শুক্র অথবা সোমবার প্রকাশ হতে পারে। এরপর আপিল করার জন্য পাঁচ দিন সময় পাবেন ক্রিস্টিন লাগার্দ।
২০১১ সালে দমিনিক স্ত্রস কান পদত্যাগ করার পর আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্রিস্টিন লাগার্দ। স্ত্রস কানও ফ্রান্সের মন্ত্রী ছিলেন।
যৌন হয়রানির অভিযোগে নিউইয়র্কে গ্রেফতারের পর তিনি আইএমএফ প্রধানের পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন স্ত্রস কান, যদিও পরে তার বিরুদ্ধে আনা ওই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।