ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা নাকচ ক্যামেরনের
মিশরের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
তবে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন যে সহিংস উগ্রপন্থীদের সাথে সংগঠনটির ‘অত্যন্ত দুর্বোধ্য সম্পর্ক রয়েছে’ এবং সংগঠনটি ‘ইচ্ছাকৃতভাবে অস্পষ্ট এবং অভ্যাসবশত গোপনীয়’।
মুসলিম ব্রাদারহুডের কার্যক্রম নিয়ে ব্রিটেনের তদন্তের প্রধান তথ্য তুলে ধরে এক লিখিত বিবৃতিতে ক্যামেরন এসব কথা বলেছেন। প্রতিবেদনটি বেশ কয়েক মাস বিলম্বে প্রকাশ করা হলো।
ব্রাদারহুডের লন্ডনেও শাখা রয়েছে। দলটি সবসময় দাবি করে আসছে যে তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতায় যেতে আন্দোলন করে আসছে।
মিশরের বর্তমান স্বৈরাচার সরকার দলটিকে নিষিদ্ধ করেছে। পাশাপাশি সৌদি আরবের মত কিছু রাজতান্ত্রিক দেশও মিশরের পথ অনুসরণ করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে দলটির রয়েছে অত্যন্ত মজবুত ভিত্তি এবং মধ্যপ্রাচ্যের একনায়করা স্বৈরশাসন বহাল রাখার ক্ষেত্রে ব্রাদারহুডকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখে থাকে।
বিবৃতিতে ক্যামেরন বলেন, ব্রাদারহুডকে ‘উগ্রপন্থার সম্ভাব্য নির্দেশক’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করার জন্য ব্রিটেনের ওপর মিশর, সৌদি আরব এবং তাদের আরব মিত্রদের প্রচণ্ড চাপ ছিল। এরপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক প্রতিবেদনে সেই কমিটি বলেছিল, ব্রাদারহুডের সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু মিশর ও সৌদি নাখোশ হবে জেনে সেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়নি।
ব্রিটিশ সরকার ব্রাদারহুডকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও মিশরের বর্তমান স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির দুঃশাসন নিয়ে নীরব রয়েছে। সম্প্রতি সিসিকে ব্রিটেনে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে এবং ব্রিটেন সিসির সরকারের সাথে সম্পর্ক জোরদার করছে । অথচ সিসি মিশরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন।
মিশর সরকার ব্রিটেনের এ প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছে।
তবে প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে ব্রাদারহুডের নেতা ইয়াহিয়া হামিদ বলেছেন, তাদের সমালোচনা খণ্ডন করার কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে উপসংহারে পৌঁছানো হয়নি।
‘এটা এখন স্পষ্ট যে মুসলিম ব্রাদাহুড নিয়ে কোনো স্বচ্ছ পর্যালোচনার ইচ্ছাই (ব্রিটিশ) প্রধানমন্ত্রীর ছিল না,’ বলেন ইয়াহিয়া।
প্রতিবেদনটি এখন ব্রিটিশ সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
ব্রাদারহুডের একজন লন্ডন-ভিত্তিক আইনজীবী বলেছেন, ‘পর্যালোচনার প্রক্রিয়া এবং ফলাফলকে আমরা আদালতে চ্যালেঞ্জ করব।’