আওয়ামীলীগ মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগকে অপমান করেছে : বাবরুল হোসেন বাবুল

Babulসৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ: ব্রিটেনের চ্যানেল আই ইউকে-ইউরোপের ষ্ট্রেইট ডায়ালগ অনুষ্ঠানে সোমবার রাতে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে এসেছিলেন সিলেটের এক সময়ের সাড়া জাগানো রাজনীতিবিদ, দুই দুইবারের নির্বাচিত সর্বাধিক জনপ্রিয় পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান, বিতর্কিত ও আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা, সিলেটের আওয়ামীলীগ নেতা বাবরুল হোসেন বাবুল।চ্যানেল আই ইউকের ডাইরেক্টর ও অনুষ্ঠানের প্রেজেন্টার রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরীর সঞ্চালনায় বাবরুল হোসেন বাবুল চিরায়ত সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় যখন আলোচনা করছিলেন, তখন প্রেজেন্টারকে বলতে শুনা যায়, কন্ট্রোলরুম থেকে তাকে বলা হচ্ছে, দর্শকদের সরাসরি টেলিফোনের কিউয়ে লাইন জ্যাম হয়ে আছে। এসময় ফয়সল ঘোষণা করেন দর্শকদের অনুরোধে এবং চাহিদার প্রেক্ষিতে আজকের নির্ধারিত একঘণ্টার অনুষ্ঠান অনির্ধারিত সময়ের জন্য চলবে, রাতের সংবাদ তাই পিছিয়ে নেয়ার জন্য তিনি কন্ট্রোল রুমকে অনুরোধ করতে শুনা যায়।
সিলেটের রাজনীতিতে বাবরুল হোসেন বাবুল এক জনপ্রিয় নাম। একসময় তিনি আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত ছিলেন, ছিলেন প্রয়াত ফরিদ গাজীর স্নেহভাজন।জিয়াউর রহমানের সময় বাবুল জিয়ার সাথে সাক্ষাত করে কৃত কর্মের জন্যে ক্ষমা চেয়ে বিএনপিতে যোগদান করলে বাবুল ক্রেজে কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। আবুল মাল আব্দুল মুহিত যখন আওয়ামীলীগে যোগদেন, বাবুল তখন আবার মুহিতের সাথে মঞ্চে ফিরে এসে আওয়ামীলীগে সক্রিয় হন।ইদানীং শুনা যাচ্ছে, বাবুল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন, আগামী নির্বাচনে হয়তো তিনি এরশাদের হাত ধরে জাতীয় পার্টির হয়ে সিলেটের আসন থেকে নির্বাচন করবেন-এমন গুজব লন্ডনের বাতাসে চালু রয়েছে।
সিলেটের আম্বর খানা থেকে নির্বাচিত পৌর চেয়ারম্যান থাকাকালে মুক্তিযোদ্ধা বাবুলকে কালো কাপড়ে চোখ ঢেকে রক্ষীবাহিনী ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের কাহিনী তুলে ধরে আবেগ তাড়িত কণ্ঠে বাবুল বলেন, দেশ স্বাধীনের পর আওয়ামীলীগের সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার মূল্যায়ন করেনি। বরং মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে। রক্ষীবাহিনীর সেদিনের কমান্ডার রাজ্জাক-তোফায়েল মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন-এমন তথ্য তিনি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানতে চান?
মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতারা কোলকাতা আর শিলাচরের হোটেলে মর্টারের শেলের দূরত্বে থেকেছেন, সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, ছাত্র, শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, ঠেলেগাড়িওয়ালারা রণাঙ্গনে মশার কামড় খেয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন, আর যুদ্ধের পরে এই বড় নেতারা বঙ্গবন্ধুকে কান কথা বলে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে, পরে রক্ষীবাহিনী দিয়ে অস্র উদ্ধারের নামে অত্যাচার করে শেষ করে দিয়েছে।
আজকের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সম্পর্কে বাবুল বলেন, উনি সম্মানিত মানুষ, সারা জীবন ঢাকা-ওয়াশিংটন থেকেছেন, দলীয় কোন্দল আর সিলেটের মানুষ সম্পর্কে উনার ধারণা না থাকারই কথা।
বাবুল বলেন, দেশে এখন অরাজকতা আর জোর যার মুল্লুক তার এমন নীতিই চলছে। দেশ প্রেমিক, মুক্তিযোদ্ধাদের কদর আর অবশিষ্ট নেই।আপনি যদি আওয়ামীলীগ করেন তবেই আপনি মুক্তিযোদ্ধা আর আপনি যদি বিরোধীদল করেন, তাহলে আপনি রাজাকার নাহলেও রাজাকারের কাছাকাছি।
বাবুল আক্ষেপ করে বলেন, আওয়ামীলীগ দুইবার ক্ষমতায় এলো। বহু আইন করে, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নাম নিয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধে কোন আইন করেনা।কারণ এতে তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।আজকে যখন স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ১২০টাকা দামের কম্বল বিতরণ করা হয়, তখন লজ্জা হয়, এজাতি মুক্তিযুদ্ধের বীর সন্তানদের কেমনকরে মূল্যায়ন করে, সহজেই অনুমেয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button