মাওলানা নিজামীর মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়ে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ডাদেশের রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৪ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
চূড়ান্ত রায়ে ৩টি অভিযোগে মৃত্যুদন্ড, ৩টিতে খালাস এবং ২টিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।
এর আগে গত বছর ৮ ডিসেম্বর একই বেঞ্চ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য ৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন।
৯ সেপ্টেম্বর এ আপিলের শুনানি শুরু হয়ে চলে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। পরে ৩০ নভেম্বর নিজামীর আপিলের যুক্তিতর্ক শুরু করে ২ ডিসেম্বর আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করেন। ট্রাইব্যুনালে নিজামীর বিরুদ্ধে প্রমাণিত ৮টি অভিযোগের সাক্ষ্যপ্রমাণ বিষয়ে ৩ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে আসামিপক্ষ। এর বিপরীতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে আপিল বিভাগ এক আদেশে ৩০ নভেম্বর, ১ ও ২ ডিসেম্বর আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য করে দেয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। এরপর যুক্তিখ-নের জন্য ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করে দেয়া হয়। আপিল মামলাটির শুনানির শুরুতে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ কার্যদিবস মামলার পেপার বুক উপস্থাপন করা হয়।
মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড এবং হত্যা-গণহত্যাসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) মোট ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ৮টি অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে।
মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর আপিল করেন তিনি।
৬ হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট পেশ করে তাতে ১৬৮টি কারণ উল্লেখ করে দন্ড থেকে খালাস চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন এ আপিল দাখিল করেন। ১২১ পৃষ্ঠায় মূল আপিল আবেদনের সঙ্গে ৬ হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করা হয়েছে। মূল আপিলে ১৬৮ টি গ্রাউন্ড পেশ করে দন্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়।