ওআইসি ৪ মুসলিম নারীকে শীর্ষ পদে নিয়োগ দিলো
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) দীর্ঘ ৪৭ বছরের ৪ জন আরব মুসলিম নারীকে শীর্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছে।
ওআইসি হচ্ছে জাতিসংঘের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা, যার সদস্যভুক্ত দেশের সংখ্যা ৫৭। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সংস্থার বর্তমান মহাসচিব ইয়াদ মাদানী নারীর ক্ষমতায়নের একজন অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন এই নিয়োগপ্রাপ্তা নারীরা হচ্ছেন, সৌদি আরব, মৌরিতানিয়া, আলজেরিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিক। এরা সবাই ওআইসির জেদ্দাস্থ সদর দফতরের সংস্কৃতি ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগ, তথ্য ও গণমাধ্যম বিভাগ, নারী ও পরিবার বিষয়ক এবং রাজনৈতিক বিভাগে কাজ করবেন।
এছাড়া আরও ১২ জন নারী সংস্থার মহাসচিবের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ওআইসির তথ্য ও গণমাধ্যম নয়া পরিচালক সৌদী নাগরিক মাহা আকীল হচ্ছেন অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পদে কর্মরত প্রথম কোনো নারী কর্মকর্তা। ওআইসিতে যোগদানের পূর্বে তিনি এর মুখপত্র ম্যাগাজিনে প্রধান সম্পাদক (ইংরেজি ভাষায় সাংবাদিক) হিসেবে কাজ করেন। দীর্ঘ অর্ধযুগ ঐ পদে দায়িত্ব পালন শেষে মাহা পদোন্নতি লাভ করে বর্তমান অবস্থানে উন্নীত হন।
স্থানীয় একটি প্রচার মাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে আকীল বলেন, ওআইসিতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তার প্রত্যেক কর্মীর যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে সমান সুযোগ, পদোন্নতির ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি তার কাজের সংক্ষিপ্ত ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, সংস্থায় তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, বিজ্ঞানবিষয়ক এবং মানবতাবাদী বিষয়াদিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। এছাড়াও ফিলিস্তিনী ইস্যু, বিশ্বব্যাপী ইসলাম ভীতি, সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই নিয়েও তিনি কাজ করেন।
মৌরিতানিয়ার নাগরিক মুলাহ আহমদ নিয়োগ পেয়েছেন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও পরিবার বিষয়ক দফতরের মহাপরিচালক হিসেবে। এর আগে ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি তার দেশের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ‘মুসলিম বিশ্ব চরমপন্থী সমস্যার চরমভাবে মোকাবিলা করছে, আমরা চেষ্টা করছি এ বিষয়ে তরুণ সমাজের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা বিশ্বের সামনে ইসলামের সঠিক চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
আলজেরীয় নাগরিক নবনিযুক্ত ফজিলাহ কিউরেন ২০১৪ সালে ওআইসির সামাজিক ও ফ্যামিলি এ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি জীবনের অভীষ্ট লক্ষ্য হিসেবে মুসলিম বিশ্বে নারী সমাজের মর্যাদা, ভূমিকা ও অবদানকে আরও উঁচুমার্গে উত্তরণ করা। এছাড়াও শিশুদের সযত্নে বেড়ে ওঠা এবং তরুণ সমাজের দক্ষতা ও মানোন্নয়নে যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
উপরন্তু তিনি পারিবারিক মূল্যবোধ, বিয়ে-শাদি সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানকে সহায়তাদান এবং সমাজের বয়োবৃদ্ধ ও যে কোনো ধরনের অভাবী ও বিশেষ সাহায্য প্রত্যাশীদের সহায়তায় তাদের পাশে দাঁড়ানোই হবে তার কর্মকাণ্ডের প্রধান লক্ষ্যবস্তু।
ইয়েমেনের নাগরিক নূরিয়াহ আবেদ আল-হামামী সংস্থার মানব বিষয়ক বিভাগের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি এই প্রথম ইয়েমেনী নারী কূটনীতিক হিসেবে স্বীয় ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন।
তিনি বলেন, তার ইচ্ছে, অনেক নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করা এবং মুসলিম নারীদের ব্যাপারে পাশ্চাত্যের নেতিবাচক ধ্যান-ধারণাকে আমূল বদলে দেয়া। এতে করে ইসলামে নারীদের যে অনেক বেশি মর্যাদাদান করা হয়েছে সে ব্যাপারটি প্রমাণ করা।